-আম্মু আমার আর এসব ভালো লাগছেনা যারা দেখতে আসে তারাও কথা শুনিয়ে যায়,তার উপর আসে পাশে মানুষ গুলোও ওদের সাথে সুর মিলায়।কালো আর খাটো হওয়া কি আমার অপরাধ আমি কি আমাকে তৈরী করছি ওরা আল্লাহ সৃষ্টিকে বিশ্বাস করেনা?আমার সব কিছু অসহ্য লাগছে।কাল থেকে যেনো এসব নাটক আর না হয় তোমাকে আমি বলে দিলাম।
-তুই এরকম রেগে যাচ্ছিস কেনো? আমরা কি কখনো তোকে অবহেলা করছি?লোকে কত কথা বলবে তাই বলে সব শুনতে হবে।
-ঠিক আছে,কিন্তু আমি তোমাকে বলে দিচ্ছি এরকম চিপ মেন্টালিটির মানুষ যেনো আমাদের বাড়ির ত্রিসীমানায় না আসে।

রিমার কথা শুনে ওর মা আর কিছু না বলে চলে যায়। মানুষে কত কথা বলবে সব শুনলে মেয়েকে বিয়ে দিবে কি করে?তাই ওনি মেয়ের কথায় হ্যা ও বলেনি না বলেনি।
(রিমা অর্নাস ফাইনাল ইয়ার পড়ে,মেধাবী ছাএী,ওরা চার ভাইবোন ও সেজ গায়ের রং শ্যামলা সবাই কালোই বলে,উচ্চতা ৫ফুট থেকে কম তাই সবাই ওকে খাটো বলে)
প্রতিদিন একটা করে পাএ আসে আর ওকে রিজেক্ট করে চলে যায়। ওর গুন,চরিএ,আচার-আচরণ এগুলো কেউ দেখেনা সবাই রুপটায় খুঁজে। এক ডজন মানুষ আসবে এক গাদা খেয়ে বাডিতে গিয়ে বলে মেয়ে আমাদের পছন্দ হয়নি।

রিমার মা বাহিরে চলে গেলে রিমার চোখ থেকে টপটপ করে অশ্রু কণা গড়িয়ে পড়ে। ঠিক এ কারণে মাহিবের মা-বাবা ও ওকে রিজেক্ট করে। মাহিব ওর কলেজের সিনিয়র।প্রথম দুই বছর ঠিক ছিলো তারপর হঠাৎ করে একদিন ওকে প্রোপজ করে বসে।রিমা প্রথমে ভয় পেয়ে যায় ও মনে করছিলো মাহিব হইতো কারোর সাথে বাজি ধরে ওকে প্রেমের জালে ফাঁসাচ্ছে। কিন্তু না পরে বুঝতে পারে মাহিব ওকে সত্যি সত্যি ভালোবাসে।তবুও রিমা রাজি হয়না ও হারাম সম্পর্কে করতে রাজি নয়।

মাহিবের বন্ধুরা রিমাকে নিয়ে মাহিবকে পঁচাতে থাকে  রিমার মধ্যে মাহিব কি দেখছে যে ও রাজি হচ্ছেনা তাও ওর পিছনে পড়ে আছে।এসব কথা রিমা শুনে ওর খুব খারাপ লাগে তাই ও মাহিবকে বলে,
,,আপনার বন্ধুরা ঠিক বলছে আপনি আর আমার পিছু নিবেননা।
তারপরও মাহিব রিমার পিছু ছাড়েনি,তা দেখে রিমা মাহিবকে বলে
,আপনি যদি আপনার মা-বাবাকে রাজি করিয়ে আমার বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব পাঠান তাহলে আমি রাজি।

মাহিবও রিমার কথা শুনে ওর বাবা-মাকে রিমার কথা বললে ওনারা খোঁজ নিয়ে দেখেন রিমার কালো এবং খাটোও।মাহিবের বাবা মাহিবকে বুঝাতে গেলে মাহিব রেগে যায়।তা দেখে মাহিবের বাবা কঠিন সিদ্ধান্ত নেয় তা শুনে মাহিবের আর কিছু বলার থাকেনা।ওর বাবা বলে মাহিব যদি রিমার কথা আর একবার বলে তাহলে মাহিবের মাকে ওনি ডিভোর্স দিবেন।
তারপর মাহিবকে বিদেশে পাঠিয়ে দেয় রিমার সাথেও আর মাহিব যোগাযোগ করেনি।

-আপু তোকে বাবা ডাকছে
ছোট বোনের ডাকে রিমা ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসে।ও চোখের পানি মুছে বাবার রুমে যায়।রিমাকে দেখে ওর বাবা ওকে কাছে ডেকে বলে

-লোকের কথায় কান দিতে নেই মা,ওদের কাজেই এটা কিভাবে মানুষকে কষ্ট দেবা যায়।কাল এক জায়গা থেকে তোমায় দেখতে আসবে
রিমা ওর বাবার কথা শুনে কিছু বলতে নিবে ওর বাবা ওকে থামিয়ে বলে

-আমি জানি তুই কি বলবি তোর মা আমায় বলছে
এ ছেলেটা অনেক ভালো তোর ভাইয়ার এক বন্ধুর আত্মীয়। আমিও খোঁজ নিয়েছি ছেলেটা অনেক ভালো ছোটখাটো চাকরি করে তবে অনেক সৎ। অহংকারী বড়লোক থেকে গরীব সৎ লোক অনেক ভালো।
রিমা বাবার কথা শুনে আর কিছু বলেনা।

,তারপরের দিন গুলো রিমার সপ্নের মতো গেছে সিয়ামেরা ওকে দেখতে আসে।দুইদিন পরেই ওদের বিয়ে ঠিক হয়ে যায়। সিয়াম যেরকম ভালো সিয়ামের বাবা-মাও সেরকম ভালো।রিমাকে নিজের মেয়ের মতো ভালোবাসেন রিমাও ওনাদের সম্মান করেন।

আর সিয়ামতো রিমা বলতে অজ্ঞান, রিমার মনে হচ্ছে যা হয়েছে ভালো হয়েছে মাহিব  কখনো ওর হতোনা।ওর বাবা-মা সুন্দরীর পুজারী সিয়ামেদের পরিবার থেকে একেবারে বিপরীত।
রিমা পিছনের সব অপমান,অবজ্ঞা মুছে নতুন জীবন শুরু করে।