এই ছেলে উঠো, standup.
জি ম্যাম,
এই তোমার শার্টের বোতাম খোলা কেন?? তুমি কি সালমান খান নাকি? যে তোমার শার্টের বোতাম খোলা থাকবে?
না ম্যাম, আসলে শার্টের বোতাম টা ছিরে গেছে, তাই লাগাতে পারছি না!
stop,চুপ করো, আমি জানি! ইচ্ছে করে বোতাম ছিরেছো আর এখন বাহানা করছো,
আজকাল কার ছেলে গুলো এমন হয়েছে যে, ইচ্ছে করে বোতাম ছিরে ফেলে, যাতে পড়ে আর আটকাতে না হয়। অনেক টা বিরক্ত মুখে নিয়েই বললেন ম্যাডাম।
আসলে বোতাম টা আমি ইচ্ছে করে ছিরে নি। কিন্তু সেটা আর ম্যাডাম কে বল্লাম না, শেধে বকা খাওয়ার ইচ্ছা আমার আর নেই।
ম্যাডাম এর মুখ টা এ রকম দেখাচ্ছে যে,মনে হচ্ছে গোটা মানব জাতির উপর সে বিরক্ত।
বসো, অনেকটা উচ্চসরেই কথাটা বল্লেম ম্যাডাম।
আমি, ভদ্র ছেলের মত বসে পরলাম।
ম্যাম এর কারনে,
ক্লাস এর সবাই এমন ভাবে তাকিয়ে আছে, যে এখন নিজেকে এলিয়েন এলিয়েন লাগছে। ধুর কেন যে আমার সাথেই এমন হয়, বুঝিনা আজকেই প্রথম ক্লাস আর আজকেই ম্যাডামের বকা।
আর ক্লাসের মেয়ে গুলোও এতো ফাজিল, মুখ চেপে খিক খিক করে হাসছে, এতে এতো হাসির কি আছে সেটাই বুঝতে পারছি না, একটি ছেলে বকা শুনছে আর সেটা দেখে তাদের হাসি পাচ্ছে, বরই আজব দুনিয়া! এ দুনিয়া এখন আর মানুষের ভালো চায় না! এমন ও দেখা যায়, যে মেয়েরা সুসাইড করতে যাবে, তার আগেও মেকাপ করে যায়, আবার কেউ মরতে বসেছে তাকে না বাচিয়ে ভিডিও করা শুরু করছে।
:আজ প্রথম ক্লাস, তাই পড়া নিয়ে কোন টেনশন নেই,
এই ক্লাসটা সবাই খুব ইনজয় করে, কারন আজ থেকেই তাদের নতুন ভাবে পথচলা, নতুন বন্ধু বান্ধব, নতুন স্যার ম্যাডাম, নতুন কলেজ, এক কথায় অসাধারন একটা দিন। কিন্তু আমার জন্য খুব একটা বাজে দিন।
ক্লাসের সবাই ব্যাস্ত, সবাই এক জন আরেক জনের সাথে পরিচিত হচ্ছে, সুধু আমি বাদে, একটাই কারন ক্লাসের শুরুতেই ম্যাডামের বকা খেয়েছি,
ম্যাডাম সবার সাথে পরিচিত হচ্ছে, এখন আর ম্যাডামকে দেখে বিরক্ত মনে হচ্ছে না, হাসি ঠাট্টার মাধ্যমেই, সবার সাথে পরিচিত হচ্ছে, মেয়েগুলোর তামাসা দেখে খুব বিরক্ত লাগছে, এমন ভাবে নামগুলো বলছে যে মনে হচ্ছে এর আগে কেউ এ রকম নাম শোনে নি, ম্যাডাম ও তাদের সাথে তাল মিলিয়ে কথা বলছে,
এবার ম্যাডাম আমাকে ডাকলেন, সালমান খান standup অনেকটা জোরের সাথেই কথা টা বলেই একটা হাসি দিলেন, ম্যাডামের সাথেই তালমিলিয়ে পুরো ক্লাস হাসিতে মেতে উঠলো,
stop stop বলতেই পুরো ক্লাস আবার নিশ্চুপ হয়ে গেলো,
বলো তোমার নাম কি?
আমি নিচুশ্বরে বল্লাম, আমার নাম, নিরব!
ম্যাডাম চোখমুখ পাকিয়ে বললেন নিরব?
জি ম্যডাম নিরব
দেখে তো মনে হয় না! মনে হয় বাজে একটা ছেলে, আচ্ছা তোমার মা বাবা এই নাম টা কেন রাখলেন জেনেছ কখনো?
জি ম্যাডাম
কেন, সত্তি টা বলবে ঘুরিয়ে পেচিয়ে মিথ্যা বলবে না!
ম্যাডাম, সেটা তো মুখে বলা সম্ভব না সেটা এক বিরাট ইতিহাস, সেটা জানতে হলে আমার ফেসবুকে একটা পোষ্ট আছে নিরব নাম নিয়ে সেটা পড়তে হবে!
ম্যাডাম উচ্চস্বরে খুব জোরে হাসলেন, আচ্ছা তোমরা কি নিরব নামের রহস্য জানতে চাও??? সবাই কে উদ্দেশ্য করে বললেন ম্যডাম।
ক্লাস থেকে খুব জোরে আওয়াজ এলো, চাই চাই
আচ্ছা, আচ্ছা , এবার সবাই থাম।
ক্লাসে বড় রকমের সোরগোল আরম্ভ হয়ে গেছে, নাম রহস্য নিয়ে,কেউ কেউ বলছে নামের ও আবার রহস্য থাকে নাকি, সবাই অধির আগ্রহে তাকিয়ে আছে নাম রহস্য শুনবে।
আচ্ছা তোমার fb id নাম বল?
ম্যাডাম Nistobdho nirob.
ম্যাডাম নামটা শুনে সেকেন্ড বারের মত ধাক্কা খেলেন।
কি???? মনে হচ্ছে এমন আশ্চর্যের কথা ম্যডাম প্রথম শুনলেন!
জি ম্যাডাম,
ম্যাডাম খুজে বের করলেন, নাম রহস্য, ক্লাসে পিনপিন নিরবতা, ম্যডাম পড়তে শুরু করছে, সবাই মনোযোগ সহকারে শুনছে, আর মাঝে মাঝে খিলখিল করে হাসছে।ম্যডাম ও খুব হাসছে, এ রকম রহস্য পড়ে!
শুধু একজন হাসছে বরং রাগে মাথা চুলকাচ্ছে আর সে হলো উর্ষা, কারন বাকি ঘটনা টুকু উর্ষা কে নিয়ে। মেয়েটা এমন ভাবে তাকিয়ে আছে, যে ক্লাস শেষ আমার খবর আছে, তার সাথে দুই বছর ইন্টার করেছি, এখন ভার্সিটি তে একই ডিপার্টমেন্টে, মেয়েটার খুব বেশি রাগী এমন কি সে মানুষ খুন করতে পারবে বলে ধারনা। আর যদি খুন করেও তবে, সর্বপ্রথম আমাকে করবে,
তারমতে, আমাকে খুন করলে তার পাপ হবে না, কারন, আমি কথায় কথায় মিথ্যা বলি, আর আল্লাহ মিথ্যাবাদীকে পছন্দ করেন না,
তাই তার থেকে সব সময় দুরে থাকার চেষ্টা করি, এমনিতে মেয়ে মানুষের বুদ্ধিশুদ্ধি হাটুর নিচে, কখন কি করে বসে বলা যায় না,
ম্যাডাম রহস্য টা পড়ে কি হাসাহাসিই না করলো, আর উর্ষা মেয়ে টা কে বারবার জানতে চাইল!
একবার ভাবলাম বলেই দেব, কিন্তু উর্ষার চোখের দিকে তাকিয়ে বলতে পারি নি, এমন ভাবে কেউ তাকিয়ে থাকে এমনি ড্যবড্যবে চোখ, তার উপর আবার কাজল নিয়েছে, মনে হচ্ছে কখন যেন চোখ দুটো বের হয়ে আসবে।
ক্লাস শেষ করে ম্যাডাম চলে গেলেন, আর ওদিক থেকে উর্ষা দৌরে, এসে কলার চেপে ধরল।এই কুত্তা
এটা তুই কি করলি,
কই আমি তো কিছু করিনি? ম্যাডাম জানতে চাইছিল তাই শুধু বলছি আমার নামের রহস্য, বলেই তার তার চোখের দিকে তাকালাম, বেচারি প্রচন্ড রেগে আছে, তার চোখ দেখে বোঝা যাচ্ছে, যে কোন সময় তুফান আসতে পারে!
ক্লাস থেকে বের হ তারপর দেখতেছি বলেই কলার ছেরে দিল,
ক্লাসের সবাই হা করে তাকিয়ে আছে আমার দিকে এতোক্ষনে কারোর বুঝতে বাকি নেই, যে সেই মেয়েটা এই ঊষা।
ক্লাস শেষ খুব তাড়াহুড়ো করে বের হচ্ছি, কারন উর্ষা আজ প্রচন্ড রেগে আছে,
ক্যামপাসের কাছে আসতেই, উচ্চস্বরে ডাক দিল উর্ষা
.পিছনে ঘুরে তাকালাম, দেখলাম উর্ষা আর সাথে কয়েকটা তার বান্ধবি, আমি দারিয়ে পড়লাম, কারন আজ যদি ফয়সালা না হয় তাহলে এ নিয়ে টেনশনে থাকতে হবে, ঠিকভাবে কলেজে আসতে পারব না।
আর বাসায় বসে থাকতে আমার একদম ভালো লাগে না। তাই প্রতিদিন কলেজে আসা আমার এক রকম নৈশা, এমনও হয় ঝর বৃষ্টির মধ্যেও আমি কলেজে, এসেছি
ঊষা কাছে এসে তার বান্ধবীদের বলল ধর শালাকে আজকে তাকে উচিত শিক্ষা দেওয়া দরকার
ঊষার কথামত তার বান্ধবীরা আমার হাতদুটো ধরে ফেলল।
এদিকে উষা পাশে পড়ে থাকা একটি গাছের ডাল নিয়ে এসে প্রচন্ড জোরে মাথায় আঘাত করল, আমি নিজেকে কন্টোল করতে না পেরে মাটিতে পড়ে গেলাম,
এক সময় আবিষ্কার করলাম, আমি হসপিটালের বেডে।মাথায় ব্যন্ডেজ হাতে স্যালাইন চলছে, পাশে বসে আছে, ক্লাসে সদ্য পরিচিত হওয়া বন্ধু ইমন।
ইমন বলল, কি মেয়ে মাইরি, সোজা মাডার করে দিল?
হুম এ রকম মেয়েগুলো একটু ডেনজারাস ই হয়।
আচ্ছা মেয়েটার বাসা কোথায়?
আমার বাসার কয়েক বাড়ি আগে,
মেয়ের নামে, থানায় একটা মামলা টুকে দিয়ে আসি, তারপর বুঝবে কত ধানে কত চাল?
আরে না বাদ দে, মেয়ের বাবা পুলিশ কিচ্ছু হবে না, তার থেকে চেপে যাই! মারমারি করে কি লাভ, তাও একটা মেয়ের সাথে? ইজ্জত বলে কিছুই থাকবে না।
মেয়ের বাবা পুলিশ শুনে, ইমন থতবত খেয়ে গেছে, তাই আর কথা বারালো না,
আমার জ্ঞান ফেরার কারনে হাসপাতাল থেকে রিলিজ করে দিল শুধু শুধু হাসপাতালে রেখে কি লাভ বাসায় গিয়ে রেষ্ট নিলে ঠিক হয়ে যাবে।
সকালে উঠে কলেজ এসেছি ঊষা তো দেখে পুরাই অবাক মাথায় ব্যান্ডেজ টা এখনো আছে। সোজা গিয়ে ইমন এর পাশের সিটে বসলাম
ঊষা বারবার তাকাচ্ছে হয়তো ভাবতেও পারেনি আমি আর কোনদিন কলেজে আসব কিন্তু আমি তার পরেরদিনই কলেজে এসেছি।
ম্যাডাম ক্লাস এ আসলো এসেই বললো কি হয়েছে নিরব?
আমি নিচুস্বরে বললাম কালকে যাওয়ার সময় একটা হোন্ডা ধাক্কা দিয়েছিল রাস্তায় পড়ে গেছিলাম সামান্য একটু মাথায় কেটে গেছে, বলেই একটা হাসি দিলাম,
দেখলাম উর্ষা তাকিয়ে আছে, হয়ত মনে মনে ভাবছে আবার মার খাওয়ার ভয়ে মিথ্যা বলেছি। তবে উষার মুখটা দেখে খুব একটা খুশি মনে হচ্ছে না। মন মরা হয়ে বসে আছে। হয়ত কালকের ঘটনার জন্য নিজের মনের সাথে পেরে উঠছে না।

ম্যাডাম সবাই কে উদ্দেশ্য করে বললেন কত বড় ফাজিল ছাএ দেখেছ, কালকে একসিডেন্ট করছে, আর আজকেই ক্লাসে এসেছে, বলেই একটা বিশ্ব জয়ের হাসি দিল।
আমি একটা শুকনো হাসি দিয়ে বসে পড়লাম।

নতুন কলেজের দিনগুলো ভালোই যাচ্ছে, অনেকগুলো নতুন বন্ধু হয়েছে, ক্লাসের ফাকে ফাকে সারাদিন আড্ডা দেই, প্রায় আট নয়জন।
ক্লাসের স্যার-ম্যাডাম গুলো আমাদের খুব ভালো করে চেনে, কারণ নিয়মিত ক্লাশ করি,
ম্যাডাম, মাঝে মাঝে একটা কথা বলেন, ফকিরের ভিক্ষা মিস আছে কিন্তু এই ফাজিল গুলোর ক্লাস মিস নাই। আচ্ছা তোদের কি কোন অসুখ বিসুখ নাই নাকি?
আমরা জোরের সাথে উওর দেই না!!!

পুরো ক্লাস আমরাই মাতিয়ে রাখি, ঝগড়া ঝামেলা আর মারামারি মধ্যে দিয়ে।ক্লাসের সব ছাএছাএী আমাদের বন্ধুত্ব দেখে আর হাসে, যে একম ও বন্ধুত্ব হয় নাকি???
ঊষা কে দেখা যায় ক্লাসের এক কোণে মনমরা হয়ে বসে আছে মাঝে মাঝে আমাদের বন্ধুত্বের খুনসুটি দেখে ফিক করে হেসে ফেলে।
সারাদিন ঝগড়া করলেও তাদের ছারা আবার কেউ চলতেই পারি না আসলে বন্ধুদের ঝগড়া মারামারি গুলো এতো সুন্দর হয়, বলা মুসকিল। বন্ধত্বের গভিরতা যে কত গভির, এদের না পেলে হয়ত জানাই হতো না।
একদিন, সবাই ক্যমপাসে বসে আড্ডা দিচ্ছি। হঠাৎ তনু বলে উঠল, কিরে নিরব তোর কোন মনের মানুষ নেই, যাকে তুই মনে মনে পছন্দ করিস?
না আমার মনে তেমন কেউ নেই,
না সবারই তো থাকে, তোর নিশ্চয় আছে, ঠিকই আমাদের বলবি না তাইতো?
আরে না, আমার এমন কিছু নেই যে তোরা জানিস না।
সবই জানলেও এটা এখনও আমরা জানি না, বলেই সবাই বলতে শুরু করল, বল বল বল?
আচ্ছা ঠিক আছে, বলছি এবার চুপ কর!
আচ্ছা ঠিক আছে বল????
উর্ষা
কি??? সবাই একসাথে এমন ভাবে বলল যে মনে হচ্ছে, বাংলাদেশ ফাইনাল জিতেছে!! কিন্তু তারা কিছুই জানে না।
হুম, উষা ই আমার মনের রাজকন্যা।
ইমন বলে উঠল, কিন্তু কি ভাবে? ওর সাথে তো তোর তেলে জলের সম্পর্ক, তোকে একবার মাথাও ফাটিয়ে দিয়েছিল?
আরে তোরা শুনতে চেয়েছিলি তাই বললাম।
Eva বলে উঠলো না এটা কখনই সম্ভব না, এ রকম বদ মেয়ের সাথে, তোর মত ছেলের কখনোই যায় না? আরেক টা দেখ, আমরা চেষ্টা করে দেখব।
আরে না বললেই কি আর হয় নাকি, মন তো একটাই তাই না, সেখানে শুধু সেই থাকে যাকে ভালোবাসা যায়।
-তাই বলে উষাকে??
হুম উষাকেই! চল ক্লাসের দেরি হয়ে যাচ্ছে! বলেই ক্লাসে চলে আসি।
কয়েকদিন পর,
ক্যমপাসে বসে আড্ডা দিচ্ছি, হঠাৎ উষার আগমন,
-নিরব তোমার সাথে আমার কিছু কথা ছিল? বলে মাথা নিচু করে দারিয়ে আছে উষা,
-হুম বলো?
আসলে সেদিন কার ঘটনার জন্য সরি! কিসের থেকে কি হয়ে গেল বুঝতে পারি নি? বিশ্বাস কর আসলে আমি এমন টা করতে চাই নি বলেই কান্না শুরু করে দিল, উষা।
আচ্ছা ঠিক আছে, আমি কিছু মনে করি নি,
তুমি যানো, সেদিনের পর থেকে আমি হাসতে ভুলে গেছি, সব সময় নিজের সাথে যুদ্ধ করে বেচে আছি?
সব সময় একই কথা মনে হয়, কি করে আমি এমনটা করলাম? রাতে ঘুমোতে পারি না, বারবার মনে হয়, তোমার কথা! এর জন্য যদি তুমি আমাকে কোন শাস্তি দাও আমি মাথা পেতে নেব, তাও এ যন্তনা সহ্য করতে পারছি, সারাক্ষন কুরে কুরে খাচ্ছে!
আরে বাবা বললাম তো আমি কিছু মনে করি নি, বসো, বলেই হাত ধরে টান দিয়ে বসিয়ে দিলাম।
-আচ্ছা নিরব তুমি এতো ভালো কেন?
ধুর আমি আবার ভালো হলাম কবে আমি এ রকমই,
উষা আমার চোখের দিকে তাকিয়ে, শুকনো একটা হাসি দিলো।
এই এভাবে আমার চোখের দিকে তাকাবে না
কেন?
কেন সেটা জানি না।
উষা চোখ নামিয়ে নিল।
,
সিয়াম এক বাদামওলা কে ডাক দিয়ে ২০ টাকার বাদাম নিয়ে, বলল, আজকের বিলটা কিন্তু উষা দিবে?
উষা কান্না ভেজা কন্ঠে বলল কেন আমি দেব কেন?
কারন আজ থেকে তুই আমাদের নতুন বন্ধু, আর এটাই তার টিট।
সিয়ামের কথায় সবাই হো হো করে হেসে দিল, সাথে উষাও ফিক করে হেসে দিল!
আমি এবার বলে উঠলাম, লারকি কে হাসি তো দিলছে ফাসি হে।
সবাই আরো জোরে হেসে উঠলো।
কয়েকদিন পর......
আমাদের কলেজের শিক্ষা সফর, সফর টা হবে কুয়াকাটা, সবাই ব্যস্ত হয়ে পরেছে, এক একজন কে এক এক দায়িত্ব দিয়েছে ম্যাডাম। কেউ গাড়ি ঠিক করবে, কেউ খাবারের ব্যবস্হা করবে,আবার কেউ ওখানে গিয়ে থাকার ব্যবস্হা করবে।
আমার কোন ব্যস্ততা নেই, কারন আমার দায়িত্ব টা, সব যাতে ঠিক ঠাক হয় সে দিকে খেয়াল রাখা, আমি তাই করছি,
সকাল ১০ টা সবাই বাসে উঠে পরেছে, আমিও উঠে পরলাম, হারামি বন্ধুগুলো উষার পাশের ছিট টা আমার জন্য রাখছে, কত বড় হারামি হলে এ রকম কাজ করতে পারে, আমার জানা নেই।
বাস চলতে শুরু করছে,
উষা আমার দিকে তাকিয়ে বলল, কি হলো বসবে না???
হ্যা বসবো তো! বলেই বসে পরলাম,
বাসের সাউন্ড বক্সএ গান বাজছে, আমার ফেবারিট একটা গান, বখাটে, বন্ধুরা গানেরর সাথে তাল মিলিয়ে গাইতে শুরু করছে, আমারও খুব করে গাইতে মন চাইল, কিন্তু উষার জন্য গাইতে পারলাম না। তার নাকি এই গান টা একদম ভালো লাগে না,
বাসের জানালা দিয়ে হালকা বাতাস আসছে, সেই বাতাশে উষার চুলগুলো উরছে,উষা বারবার চুল ঠিক করছে,
আমি আনমনে তাকিয়ে আছি তার মুখের দিকে! কি মায়াভরা চোখ, কাজল কালো চুল, একদম মুগ্ধ করার মত,
ঊষা - কি ব্যপার এমন করে তাকিয়ে আছো কেন?
-আমি, অনেকটা থতবত খেয়ে বললাম কই, কই নাতো!!
উষা -মিথ্যা বলবে না আমি দেখছি, অনেকক্ষন তুমি আমার দিকে তাকিয়ে আছো!
- না না তুমি ভুল দেখেছো, ( ঊষা এমন ভাবে কথা বলছে যে আমার কথা বলার যায়গা রাখছে না।)
উষা-আসলে নিরব আমি সব জানি?
-আমি অনেক টা আশ্চর্য হয়ে বললাম কি জানো তুমি??
-এই যে তুমি আমাকে পছন্দ করো, কিন্তু সেটা বলতে পার না!
-এ্যা,,,, কে বলছে তোমায়?
-ইভা বলছে, তুমি নাকি আমায় পছন্দ করো?
- এ্যা,,, হারমি টা কই, মিথ্যা বানিয়ে বানিয়ে বলে মান ইজ্জত সব পামছার করে দিসে, আজকে ওর একদিন না হয় আমার! বলেই উঠে দাড়ালাম।
-এ্যা এ্যা করছো কেন? বসো!! অনেক টা ধমকের সাথেই কথা টা বলল উষা।
আমি বসে পরলাম,
-আসলে নিরব, আমিও তোমাকে পছন্দ করি, হয়ত ভালোও বাসি, সেদিনের পর থেকে কখন যে মনে ভালোবাসা জম্ম নিয়ছে বুঝতে পারি নি।
-মাথা ফাটানোর পর, ভালোবাসা?
-হুম সেদিনের পড়, সব সময় তোমার জন্য মায়া হতো,সব সময় তোমার কথা ভাবতাম, তার থেকেই ভালোবাসার জম্ম হয়েছে!
- সত্তি?
-হুম সত্তি।
-তাহলে, একবার i love you বলো?
-না সেটা আমি পারবো না, তুমি বলো?
আমি উষার কানের কাছে, মুখ টা নিয়ে ফিসফিস করে বল্লাম, i love you উষা, আমার মুখে কথাটা শুনে উষা কেপে উঠে, পাশে পড়ে থাকা হাত টা খুব শক্ত করে জরিয়ে ধরে বলছে, যা ফাজিল কোথাকার, এভাবে কেউ বলে।
এই এরকম চোখ বন্ধ করে আছো কেন? চোখ খোলো??(উষার মুখ টা লজ্জায় লাল হয়ে গেছে।)
-না আমি পারব না, খুব লজ্জা লাগছে।
-তুমিই তো শুনতে চাইলে,??
-চুপ, কোন কথা বলো না. এখন তোমার কথাতেও লজ্জা লাগছে।
আমি চুপ করে বসে আছি, উষা এখনো মুখ তোলে নি, তার লজ্জার রেশ এখনো কাটে নি।
থাকছে এভাবে থাকুক না, কিছুক্ষন ভালোবাসার মানুষের স্পর্শ।
....
ভালোবাসা কি সব সময় মুখে বলেই প্রকাশ পায়?
না ভালোবাসা কখনো লজ্জাতেও প্রকাশ পায়।