একটা চিঠিতে জিজ্ঞেস করেছিলাম, তোমার প্রিয় ফুল কী??
পরের চিঠিতে খামের মধ্যে কিছু শুকনো ঘাসফুল পেয়ে চমকে গিয়েছিলাম।
তারপর থেকে কেউ ভোরের শিশিরভেজা ঘাসফুল মাড়িয়ে গেলে মাথা গরম হয়ে যায়।
একদিন সকালে দেখি আব্বু সবুজ ঘাসের গালিচার উপর ফুটে থাকা সাদা ঘাসফুলের উপর দিয়ে বাইক চালিয়ে বাসায় আসছে।বরাবর লাজুক আমি আব্বুর কাছে গিয়ে বললাম,আব্বু দেখেন তো চমৎকার সব ফুলের কি দফারফা করেছেন??
আব্বু চশমার কাচ পরিষ্কার করতে করতে বললেন,ঐ পিচ্চি পিচ্চি ফুলতো চোখেই পড়েনা।
সেদিন তোমার উপর খুব রাগ হয়েছিলো।সত্যিইতো।ঘাসের উপর ছোট্টছোট্ট ফুল।পায়ের নিচে পড়বেই আর সেই ফুলকেই কিনা তোমার প্রিয় ফুল হতে হলো।
আমার ক্ষোভ জানার পর তুমি আমাকে লেখা তোমার শেষ কবিতাটি পাঠালে।কবিতার শেষ ৪ লাইন মনে পড়ে তোমার??
"তুমি মুগ্ধ জলপদ্মে আর
জলপদ্ম মুগ্ধ তোমার চাহনিতে।
এই কি পরিতৃপ্তি নয়??
ঘাসফুল নয় তোমার জলপদ্ম হয়ে হারাতে চাই অতলে"।
.
আমি কবিতা লিখতে পারিনা তবুও তুমি আমাকে কবি ডাকতে আর তুমি অসাধারণ কবিতা লিখলেও তোমাকে আমি কবি ডাকতে পারিনি।তোমার নিষেধ ছিলো।তুমি শুধুই আমার জলপদ্ম হয়ে থাকতে চেয়েছিলে।বিশ্বাস করো এখনো তুমি আমার জলপদ্ম।এই আধুনিক সময়েও তুমি ভালোবাসা বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছিলে চিঠি।তোমার মতে এটাই নাকি "বিশুদ্ধ অনুভূতি"।আমি খাদহীন মানুষ নই কিন্তু মাঝেমাঝে যখন বুকের মধ্যখান থেকে তোমার অস্তিত্ব প্রবলভাবে জানান দেয় তখনি অবাক হয়ে বুঝতে পারি তোমার প্রতি আমার আবেগের পুরোটাই বিশুদ্ধ।পুরোটাই খাদহীন।
.
তোমার ঠিকানা থেকে শেষ চিঠিটি পাই এক প্রবল বর্ষার সকালে।ঘুম থেকে উঠে বারান্দায় চেয়ারে বসে মুখে হাত দিয়ে বৃষ্টি দেখছিলাম।হঠাৎ ই চিঠিটা এলো।বাংলাদেশ ডাকবিভাগ যে এখনো মাঝেমাঝে দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করে সেটা নিয়ে সরস একটা লেখা মাথায় গেঁথে যায়।চিন্তা করতে থাকি কখন তোমাকে লিখবো।চিঠির খামে তোমার ঠিকানা কিন্তু হাতের লেখা অন্য কারো দেখে আমি মুচকি হাসছিলাম।তুমি রহস্য পছন্দ করো আর সবাইকে একটু চমকে দেওয়া তোমার অভ্যাস।ভেতরের চিঠিটা বের করে দেখলাম ওটাও তোমার হাতে লেখা নয়।তখনো মুচকি হাসছি ভাবছি দুষ্টু মেয়েটা আজ জোর করেই দেখি চমকে দিতে চায়।চিঠিটা সংক্ষিপ্ত ছিলো কিন্তু চিঠিটার প্রভাব ছিলো আমার ২৪ বছরের জীবনে অন্য সবকিছু থেকে বেশি।খামের ভেতর তোমার চোখের চারকপি ছবি দিয়েছিলো তোমার বোন।প্রতিটি ছবির পিছনে রঙিন কালিতে তুমি লিখেছিলে,"সিগারেট নয় তোমার নেশা হবে শুধুই আমার দুচোখ"।আমি সেদিন থেকে সিগারেট ছেড়ে দিয়েছি।
.
আমাদের বাসার বেশকাছেই একটা বিল আছে নাম পদ্মবিল।সেই বিলে অজস্র পদ্ম ফুটে থাকে।সবাই সেই পদ্মের বিলে ঘুরতে গেলেও আমি কখনো যাইনি।যাইনি শুধু তোমার উপর অভিমান করে।রাগ করে।আমি খুব বদলে গেছি।এখন আর চুপিচুপি শেষরাতে ছাদে গিয়ে তারা গুনি না।সন্ধ্যার পর ছাদেই বসে থাকি।হাজারো টুকরো স্বপ্নে তুমি এসে আমার চোখ ভিজিয়ে দাও।সেদিন মনেমনে তোমার কাছে চলে আসার একটা সংকল্প করেছিলাম।ঘুমের মাঝে দেখি তুমি কাঁদছো।তোমার টানাটানা চোখ দিয়ে যেনো কান্না নয় সাগরের ঢেউ আছড়ে পড়ছে।কাঁদতে কাঁদতে বললে,কবি, তুমি আমার কাছে আসলে আমার প্রিয় ঘাসফুলের কী হবে??
পরদিন থেকে হাতে একটা লাঠি নিয়ে বাসার সামনে মাঠের এককোণে বসে থাকি।ফুটে থাকা শিশিরভেজা ঘাসফুল আর কেউ মাড়িয়ে যায়না।মাঝেমাঝেই দেখি তুমি ঘাসফুলের অপরপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছো।তোমার চোখে সেই মায়াবি আলো আর মুখে দুষ্টুহাসি।সেই হাসি দেখে আমি হাসি আর আমার মা কাঁদে।
কল্পলোকে ভালো থেকো তুমি।
পরের চিঠিতে খামের মধ্যে কিছু শুকনো ঘাসফুল পেয়ে চমকে গিয়েছিলাম।
তারপর থেকে কেউ ভোরের শিশিরভেজা ঘাসফুল মাড়িয়ে গেলে মাথা গরম হয়ে যায়।
একদিন সকালে দেখি আব্বু সবুজ ঘাসের গালিচার উপর ফুটে থাকা সাদা ঘাসফুলের উপর দিয়ে বাইক চালিয়ে বাসায় আসছে।বরাবর লাজুক আমি আব্বুর কাছে গিয়ে বললাম,আব্বু দেখেন তো চমৎকার সব ফুলের কি দফারফা করেছেন??
আব্বু চশমার কাচ পরিষ্কার করতে করতে বললেন,ঐ পিচ্চি পিচ্চি ফুলতো চোখেই পড়েনা।
সেদিন তোমার উপর খুব রাগ হয়েছিলো।সত্যিইতো।ঘাসের উপর ছোট্টছোট্ট ফুল।পায়ের নিচে পড়বেই আর সেই ফুলকেই কিনা তোমার প্রিয় ফুল হতে হলো।
আমার ক্ষোভ জানার পর তুমি আমাকে লেখা তোমার শেষ কবিতাটি পাঠালে।কবিতার শেষ ৪ লাইন মনে পড়ে তোমার??
"তুমি মুগ্ধ জলপদ্মে আর
জলপদ্ম মুগ্ধ তোমার চাহনিতে।
এই কি পরিতৃপ্তি নয়??
ঘাসফুল নয় তোমার জলপদ্ম হয়ে হারাতে চাই অতলে"।
.
আমি কবিতা লিখতে পারিনা তবুও তুমি আমাকে কবি ডাকতে আর তুমি অসাধারণ কবিতা লিখলেও তোমাকে আমি কবি ডাকতে পারিনি।তোমার নিষেধ ছিলো।তুমি শুধুই আমার জলপদ্ম হয়ে থাকতে চেয়েছিলে।বিশ্বাস করো এখনো তুমি আমার জলপদ্ম।এই আধুনিক সময়েও তুমি ভালোবাসা বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছিলে চিঠি।তোমার মতে এটাই নাকি "বিশুদ্ধ অনুভূতি"।আমি খাদহীন মানুষ নই কিন্তু মাঝেমাঝে যখন বুকের মধ্যখান থেকে তোমার অস্তিত্ব প্রবলভাবে জানান দেয় তখনি অবাক হয়ে বুঝতে পারি তোমার প্রতি আমার আবেগের পুরোটাই বিশুদ্ধ।পুরোটাই খাদহীন।
.
তোমার ঠিকানা থেকে শেষ চিঠিটি পাই এক প্রবল বর্ষার সকালে।ঘুম থেকে উঠে বারান্দায় চেয়ারে বসে মুখে হাত দিয়ে বৃষ্টি দেখছিলাম।হঠাৎ ই চিঠিটা এলো।বাংলাদেশ ডাকবিভাগ যে এখনো মাঝেমাঝে দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করে সেটা নিয়ে সরস একটা লেখা মাথায় গেঁথে যায়।চিন্তা করতে থাকি কখন তোমাকে লিখবো।চিঠির খামে তোমার ঠিকানা কিন্তু হাতের লেখা অন্য কারো দেখে আমি মুচকি হাসছিলাম।তুমি রহস্য পছন্দ করো আর সবাইকে একটু চমকে দেওয়া তোমার অভ্যাস।ভেতরের চিঠিটা বের করে দেখলাম ওটাও তোমার হাতে লেখা নয়।তখনো মুচকি হাসছি ভাবছি দুষ্টু মেয়েটা আজ জোর করেই দেখি চমকে দিতে চায়।চিঠিটা সংক্ষিপ্ত ছিলো কিন্তু চিঠিটার প্রভাব ছিলো আমার ২৪ বছরের জীবনে অন্য সবকিছু থেকে বেশি।খামের ভেতর তোমার চোখের চারকপি ছবি দিয়েছিলো তোমার বোন।প্রতিটি ছবির পিছনে রঙিন কালিতে তুমি লিখেছিলে,"সিগারেট নয় তোমার নেশা হবে শুধুই আমার দুচোখ"।আমি সেদিন থেকে সিগারেট ছেড়ে দিয়েছি।
.
আমাদের বাসার বেশকাছেই একটা বিল আছে নাম পদ্মবিল।সেই বিলে অজস্র পদ্ম ফুটে থাকে।সবাই সেই পদ্মের বিলে ঘুরতে গেলেও আমি কখনো যাইনি।যাইনি শুধু তোমার উপর অভিমান করে।রাগ করে।আমি খুব বদলে গেছি।এখন আর চুপিচুপি শেষরাতে ছাদে গিয়ে তারা গুনি না।সন্ধ্যার পর ছাদেই বসে থাকি।হাজারো টুকরো স্বপ্নে তুমি এসে আমার চোখ ভিজিয়ে দাও।সেদিন মনেমনে তোমার কাছে চলে আসার একটা সংকল্প করেছিলাম।ঘুমের মাঝে দেখি তুমি কাঁদছো।তোমার টানাটানা চোখ দিয়ে যেনো কান্না নয় সাগরের ঢেউ আছড়ে পড়ছে।কাঁদতে কাঁদতে বললে,কবি, তুমি আমার কাছে আসলে আমার প্রিয় ঘাসফুলের কী হবে??
পরদিন থেকে হাতে একটা লাঠি নিয়ে বাসার সামনে মাঠের এককোণে বসে থাকি।ফুটে থাকা শিশিরভেজা ঘাসফুল আর কেউ মাড়িয়ে যায়না।মাঝেমাঝেই দেখি তুমি ঘাসফুলের অপরপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছো।তোমার চোখে সেই মায়াবি আলো আর মুখে দুষ্টুহাসি।সেই হাসি দেখে আমি হাসি আর আমার মা কাঁদে।
কল্পলোকে ভালো থেকো তুমি।
0 Comments