হিটলু মিয়া গোবেচারা মুখে বেতনের পুরো ৪০ হাজার টাকা স্ত্রীর হাতে তুলে দিতে দিতে....
:সব টাকা কিন্তু তোমার হাতে দিয়ে দিলাম এই মাসে।দেখ আমার পকেটে একটা দুই টাকার কয়েনও রাখি নাই।
:ইশ্ রে!আচ্ছা একটু দাঁড়াও..
কিছুক্ষন পরে বেতনের টাকাটা আলমারিতে রেখে কিছু একটা হাতে নিয়ে স্বামীর নিকট পেয়ারা বেগমের আগমন।হিটলু মিয়া মনে মনে খুশি হয়ে হাত বাড়িয়ে দিয়ে বললো,
:এ মাসে কিন্তু হাত খরচটা একটু বেশি দিও।
:এই নাও ২টাকার কয়েন।অনেক খুঁজে পেয়েছি।পকেটে এইটা সব সময় রেখে দিবা বুঝছো?এখন থেকে আর বলবা না যে পকেটে একটা পয়সাও নাই।
হাত টান দিয়ে সরাতে না সরাতেই পেয়ারা বেগম সেই অনেক কষ্টে খুঁজে পাওয়া কয়েনটা হিটলু মিয়ার হাতে গুজে দিলেন।
:এটা কি হল পেয়ারা বেগম?আমার হাত খরচ কই?তুমি প্রমিজ করেছিলে বেতনের সব টাকা তোমার হাতে তুলে দিলে আমাকে ৪০০০টাকা হাত খরচ বাবদ দেবে।কিন্তু এখন পল্টি মুরগীর মত পল্টি নিলা কেন?
:মানুষ মরে গেলে পঁচে যায়, বেঁচে থাকলে বদলায়,কারনে অকারনে বদলায়....
এই কথা বলতে বলতে পেয়ারা বেগম বাথরুমের দরজায় খিল দিলেন এবং বিকট শব্দে বাজখাই গলায় গান ধরলেন...
"আমাকে আমার মত থাকতে দাও,আমি নিজেকে নিজের মত গুছিয়ে নিয়েছি,যেটা ছিল না ছিল না সেটা না পাওয়াই থাক,এই নিয়ে কষ্ট ভীষণ??....
হিটলু মিয়া বুঝতে পারলেন এই গান গাওয়া মানে হল পেয়ারা তাকে টাকা তো দেবেই না সাথে চা নাস্তাও বন্ধ।কারণ এই মহিলা বাথরুমে ঢোকা মানে ২-৩ঘন্টা সেখানে কাটানো।কেমনে পারে আল্লাহ্ জানে!!
এখন টাকা হাতে পাবার উপায় কি সেটা ভাবতে লাগলেন তিনি।রাতে হাত খরচের চিন্তায় তার ঘুম হলো না।অন্যদিকে পেয়ারা বেগম স্বপ্নে দেখতে লাগলেন খরচপাতি মিটিয়ে তার কাছে ১০০০০টাকা রয়ে গেছে।সেটা দিয়ে তিনি শপিং করছেন,পার্লারে যাচ্ছে আর মজার মজার খাবার কিনে খাচ্ছেন।
এখন টাকা হাতে পাবার উপায় কি সেটা ভাবতে লাগলেন তিনি।রাতে হাত খরচের চিন্তায় তার ঘুম হলো না।অন্যদিকে পেয়ারা বেগম স্বপ্নে দেখতে লাগলেন খরচপাতি মিটিয়ে তার কাছে ১০০০০টাকা রয়ে গেছে।সেটা দিয়ে তিনি শপিং করছেন,পার্লারে যাচ্ছে আর মজার মজার খাবার কিনে খাচ্ছেন।
(সকালে...)
:কই গো আমার হাত খরচের টাকা দাও।
:হাত খরচ লাগবে কেন?অফিসে তো হেঁটেই যাও।প্রয়োজনীয় কিছু লাগলে বলো আমি কিনে দেব।
:হাত খরচ লাগবে কেন?অফিসে তো হেঁটেই যাও।প্রয়োজনীয় কিছু লাগলে বলো আমি কিনে দেব।
এই মহিলার সাথে তর্কে সব সময় হিটলু কুপোকাত হন। সকাল সকাল তার কুপো বা কাত কোনটাই হবার ইচ্ছে জাগলো না আর তাই নিরবে হিটলারি বুদ্ধি বের করতে করতে তিন তলা বাসার নিচ তলায় আসলেন।
একটু পর....
:পেয়ারা, পেয়ারা দরজা খোল।তারাতারি...ধুম ধুম ধুম
:আরে আরে খুলছি তো।দরজা ভেঙে ফেলবে না কি?(দরজা খুলে)
কি হয়েছে?এত তড়িঘড়ি করে ফিরে এলে যে?অফিসে যাবা না?
কি হয়েছে?এত তড়িঘড়ি করে ফিরে এলে যে?অফিসে যাবা না?
:আরে দারুন একটা সুযোগ পেয়েছি বুঝছো?অফিসের কাছাকাছি যেতেই দেখি রফিক কে।ওই যে আমার বন্ধু,গাড়ি নিয়ে এসেছিল যে..
:হ্যাঁ হ্যাঁ চিনেছি।কি হইছে তার?
:আরে তার কিছু হয় নাই কিন্তু ব্যবসায় লস খাইছে।এখন টাকার প্রয়োজন সে জন্য বউয়ের লেটেস্ট মডেলের কিছু গয়না বিক্রি করে দেবে বললো।একটা ছোট কিন্তু দেখতে দারুন ইয়ার রিং খুব পছন্দ হয়েছে।১০০০০টাকায় দেবে বলেছে।তুমি কি নেবে ওটা?
:সত্যি?ঢপ মারছো না তো?
:আরে বাবা নাহ্।নিলে তারাতারি টাকাটা দাও ও ওয়েট করছে।
:আরে বাবা নাহ্।নিলে তারাতারি টাকাটা দাও ও ওয়েট করছে।
:এই নাও টাকা।হ্যাঁ গো খুব সুন্দর দেখতে?
:আনলেই দেখ,এখন যাই দেরি হয়ে যাচ্ছে।
রাতে বাসায় ফিরে...
:এই নাও তোমার দুল।দেখ পছন্দ হয় কি না।
:বাহ্!দারুন তো!!!
হিটলু মনে মনে খুশিতে লুঙ্গি ড্যান্স দিল।যাক বাবা বাঁচা গেল দুশো টাকার জিনিস দিয়ে দশ হাজার টাকা আদায় করা।বোঝ এবার পেয়ারা বেগম হিটলুর সাথে পল্টি নেবার মজা বোঝ।
পরদিন বিকেলে পাশের বাসার ভাবীর আগমন...
:ভাবী দেখেন আপনার ভাই আমাকে কি সুন্দর একটা গোল্ডের দুল দিয়েছে।সে যে আমাকে কত ভালবাসে বলে বোঝাতে পারবো না ভাবী।এমনকি তার বেতনের পুরো টাকাটা আমার হাতে দিয়ে দেয় ভাবী।
:আরে ভাবী এই ডিজাইনের দুলটা তো কালকে গলির রুপার দোকানে এসেছে।আমিও একটা নিয়েছি দুশো দিয়ে।সেটা দেখাতেই তো আসলাম।এই দেখেন ভাবী...
:এ্যাঁ!!!
:এ্যাঁ!!!
রাতে....
(মনে মনে)
:হিটলু খাইছি তোরে,খাইছি তোরে,খাইছি তোরে,পালাবি কোথায় ব্যাটা হিটলার?পেয়ারা বেগমের সাথে ছলচাতুরী?বিচার হবে কঠিন বিচার।
কান্না করতে করতে...
:হিটলু খাইছি তোরে,খাইছি তোরে,খাইছি তোরে,পালাবি কোথায় ব্যাটা হিটলার?পেয়ারা বেগমের সাথে ছলচাতুরী?বিচার হবে কঠিন বিচার।
কান্না করতে করতে...
:শুনছো??
:কি হইছে বল।
:আজকে বাজার করার সময় আমার ব্যাগ থেকে বাসা ভাড়ার ১০০০০টাকা কোথায় যেন পড়ে গেছে।খুঁজে পাচ্ছি না।ভেবেছিলাম বাজার করে ফেরার পথে বাড়িওয়ালাকে ভাড়াটা দিয়ে আসবো।এখন কি হবে?
:কি হইছে বল।
:আজকে বাজার করার সময় আমার ব্যাগ থেকে বাসা ভাড়ার ১০০০০টাকা কোথায় যেন পড়ে গেছে।খুঁজে পাচ্ছি না।ভেবেছিলাম বাজার করে ফেরার পথে বাড়িওয়ালাকে ভাড়াটা দিয়ে আসবো।এখন কি হবে?
:কি সর্বনাশ!!!আমি এত টাকা এখন কোত্থেকে ম্যানেজ করবো?
:আমাদের বাসায় ফোন দিয়ে টাকাটা ধার চাই?
:না না।এটা করবে না প্লিজ।
:তাহলে,এই দুলটা নিয়ে তোমার বন্ধুকে ফেরত দিয়ে টাকাটা নিয়ে আসো।আমার দুল লাগবে না(মুখ কালো করে)
:ও যদি টাকা না দেয়?
:তাহলে আমার আব্বা কে ফোন দিয়ে টাকা ধার করে বাসা ভাড়াটা দিয়ে দেব।বাকি ২০০০০টাকা থেকে তো নেয়াই যাবে না।কারন ব্যাংকের ডিপিএস আর খাবার খরচ বাবদ ওটা পুরোই লাগবে।রফিক ভাইকে ভাল করে রিকোয়েস্ট করো দেখবে তিনি দুলটা ফেরত নিয়েছেন।
:তাহলে আমার আব্বা কে ফোন দিয়ে টাকা ধার করে বাসা ভাড়াটা দিয়ে দেব।বাকি ২০০০০টাকা থেকে তো নেয়াই যাবে না।কারন ব্যাংকের ডিপিএস আর খাবার খরচ বাবদ ওটা পুরোই লাগবে।রফিক ভাইকে ভাল করে রিকোয়েস্ট করো দেখবে তিনি দুলটা ফেরত নিয়েছেন।
হিটলুর চোখে ভেসে উঠল আজকের চাইনিস খাবার দৃশ্য।খাবার যেন এখন নাক দিয়ে বেড়ুবে।পকেট থেকে নয় হাজার টাকা বের করে দিয়ে সে পেয়ারা বেগমের কাছে সরি বললো।
পেয়ারা বেগম দারোগার মূর্তি ধারন করে বললো,তুমি সের হলে আমি সোয়াসের।আমার সাথে হিটলারি ব্যাটা হিটলু?আর এমন করবা না প্রমিজ করো।
:আচ্ছা কান ধরে প্রমিজ করবো তার আগে তুমি বলো আমাকে পকেট খরচ দিবা?
:যাও দেব প্রতিদিন।আর হ্যাঁ,টাকা হারায় নাই তোমাকে জব্দ করতে এটা করা ছাড়া উপায় ছিল না।
:কি!!!!দাঁড়াও তুমি...
:কি!!!!দাঁড়াও তুমি...
পেয়ারা বেগম দৌড়ে বাথরুমে গিয়ে দরজায় খিল দিয়ে গান ধরলেন,
"ফান্দে পড়িয়া বগা কান্দে রে..."
0 Comments