(y) (y) বৃদ্ধাশ্রম থেকে এক দুঃখী মায়ের চিঠি, নাকফুলটা বিক্রি করে আমার কাফনের কাপড় কিনে দিও (y) (y)
-
আমার আদর ও
ভালোবাসা নিও।
অনেক দিন তোমাকে দেখি না,
আমার খুব
কষ্ট হয়। কান্নায়
আমার বুক ভেঙে যায়। আমার
জন্য তোমার কী অনুভূতি আমি জানি না। তবে ছোটবেলায় তুমি আমাকে ছাড়া কিছুই
বুঝতে না। আমি যদি কখনওতোমার
চোখের আড়াল
হতাম মা মা বলে চিৎকার করতে।
মাকে ছাড়া কারও
কোলে তুমি যেতে না।
-
সাত বছর বয়সে তুমি আমগাছ থেকে পড়ে হাঁটুতে ব্যথা পেয়েছিলে।
তোমারবাবা হালের
বলদ বিক্রি করে তোমার চিকিৎসা করিয়েছেন।
-
তখন তিন
দিন, তিন
রাত তোমার
পাশে না ঘুমিয়ে,
না খেয়ে,
গোসল না করে কাটিয়েছিলাম।
এগুলো তোমার
মনে থাকার
কথা নয়। তুমি একমুহূর্ত আমাকে না দেখে থাকতে পারতে না।
-
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার
সময় আমার
বিয়েরগয়না বিক্রি করে তোমার
পড়ার খরচ
জুগিয়েছি।
হাঁটুর ব্যথাটা তোমার মাঝে মধ্যেই হতো।
বাবা… এখনও
কি তোমার
সেই ব্যথাটা আছে?
-
রাতের বেলায় তোমার মাথায় হাত
না বুলিয়ে দিলে তুমি ঘুমাতে না।
এখনতোমার
কেমন ঘুম হয়?
-
আমার কথা কি তোমার একবারও মনে হয় না?
তুমি দুধ না খেয়ে ঘুমাতে না।
-
তোমার প্রতি আমার
কোনো অভিযোগ
নেই। আমার
কপালে যা লেখা আছে হবে।
আমার জন্য
তুমি কোনো চিন্তা করো না।
আমি খুব ভালো আছি। কেবল তোমার চাঁদ
মুখখানি দেখতে আমার খুব মন চায়। তুমি ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করবে।
-
তোমার বোন….তার
খবরাখবর নিও।
-
আমার কথা জিজ্ঞেস করলে বলো আমি ভালো আছি।
-
আমি দোয়া করি,
তোমাকে যেন আমার মতো বৃদ্ধাশ্রমে থাকতে না হয়।
-
কোনো এক
জ্যোস্না ভরা রাতে আকাশ পানে তাকিয়ে জীবনের
অতীত, বর্তমান
ও ভবিষ্যৎ নিয়ে একটু ভেবে নিও।
বিবেকের
কাছে উত্তর
পেয়ে যাবে।
-
তোমার কাছে আমার শেষ একটা ইচ্ছা আছে। আমি আশা করি তুমি আমার শেষ
ইচ্ছাটা রাখবে।
আমি মারা গেলে বৃদ্ধাশ্রম থেকে নিয়ে আমাকে তোমার
বাবার কবরের
পাশে কবরদিও।
এজন্য তোমাকে কোনো টাকা খরচ
করতে হবে না।
তোমার বাবা বিয়ের সময় যে নাকফুলটা দিয়েছিল
সেটা আমার
কাপড়ের
আঁচলে বেঁধে রেখেছি।
নাকফুলটা বিক্রি করে আমার
কাফনের কাপড়
কিনে নিও।
-
তোমার ছোটবেলার একটি ছবি আমার
কাছে রেখে দিয়েছি।
ছবিটা দেখে দেখে মনে মনে ভাবি এটাই কি আমার সেই খোকা!’
(y) এভাবে বেদনা ভরা একটি খোলা চিঠি ছেলের উদ্দেশে লিখেছেন
একজন মা। তার
বয়স এখন আশি।
ছয় বছর আগে তার
আশ্রয় জুটেছে বৃদ্ধাশ্রমে।
-----
0 Comments