জীবনে প্রথম শারীরিক সম্পর্কে জড়াই যখন আমার বয়স ২০।অবাক হচ্ছেন? অবাক হবার ই বিষয়। বাড়িতে সৎ ভাইয়ের অমানবিক নিযার্তনের শিকার হতাম প্রতিদিন।অনেকটা জেদের বশত বাবাকে রাজি করিয়ে ঢাকাতে ভতি' হলাম।থাকতাম ধানমন্ডির শুক্রাবাদ এলাকায়।অনেক খেত ছিলাম অইসময়।স্মার্টনেছ বুঝতাম না।মফস্বলের সাদামাটা মেয়ে ছিলাম। বান্ধবিদের সাথে ক্লাসের বিরতিতে কাছের এক শপিং মলে গেলাম।আমার বান্ধবি তানিয়াকে দেখলাম একটা ছেলের সাথে কথা বলতে।কিছুক্ষণ পর ছেলেটিকে এনে পরিচয় করিয়ে দিলো বলল ওর বন্ধু।ছেলেটি বারবার আমার দিকে তাকাচ্ছিলো। আমি ইগনর করছিলাম।কয়েকদিন পরে আবিষ্কার করি ছেলেটি আমার বাসার পাশেই থাকে।শুরু হলো তার আমার পিছনে লাগা।ফেসবুকে বন্ধু হতে চাওয়া,আমার সাথে দেখা করতে চাওয়া,ভাসি'টির গেটে দাড়িয়ে থাকা। মেয়ে মানুষ না না করতে করতেই কখন যেন প্রেমে পড়ে গেলাম।তার অবশ্য আগে একজন প্রেমিকা ছিল।সেই মেয়ে নাকি তার সাথে অনেক বড় প্রতারণা করেছে।দিনের পর দিন ভালোবাসার মিথ্যে অভিনয় করেছে।বলতে যেয়ে ছেলেটা কাদো কাদো হয়ে গেলো। ছেলেটি আমায় অনেক অনুরোধ করলো আমি যেন তার সাথে এরকম কখনো না করি।ছেলেটির নামটাই এখনও বলা হয়নি।ওর নাম ছিল সরন।আর আমি মোনা।এভাবেই চলছিল আমাদের প্রেম।কিছুদিন পর লক্ষ্য করলাম ও আমার একটু বেশিই কাছে আসতে চায়।আমি মফস্বলের মেয়ে এত কিছু তখনও বুঝতাম না।ওর বাবার বাসা ছিল কুমিল্লা কিন্ত পড়াশোনা ছিল ঢাকাতেই। সরন আমার থেকে অনেক স্মার্ট ছিল।একদিন আমায় বলল ওর বন্ধুর জন্মদিন।বাসায় দাওয়াত করেছে সব বন্ধুদের। বলল আমাকেও নিয়ে যাবে।আমি সাজুগুজু করে সরনের সাথে বের হলাম।বন্ধুর বাসা মিরপুরে।বাসায় যেয়ে দেখি তার বন্ধু ছাড়া আর কেউ নেই। আমার একটু ভয় করলো।খানিকক্ষণ পর বন্ধুটি চলে গেলো আমি আরো ভয় পেলাম।আমি বললাম কই তোমার বন্ধুর জন্মদি। অন্য বন্ধুরা কোথায়।সরন বলল একটা প্রব্লেম এর জন্য প্রোগ্রাম বাদ দেয়া হয়েছে।আমি শুনে সাথে সাথে বললাম আমি এখানে থাকবোনা আমাকে নিয়ে চলো।সরন শুনলে আমাকে এক হেচকা টান দিয়ে বিছানায় ফেলে দিলো।অনেক্ষণ ধস্তাধস্তি হলো।আমি চিৎকারে করছিলাম।একসময় সরন আমাকে ছেড়ে দিলো।বলল তুমি এত খেত কেন? ঢাকাতে কমবেশি সব বফ গফ রাই ফিজিক্যাল করে।আমার সব বন্ধুরাও তার গফ দের সাথে করে আর তুমি সত্যি একটা খেত।আমি খুব কান্না করছিলাম।সেই যাত্রায় বেচে যাই।এরপর থেকে সরন আমাকে ইগ্নর করে।কথা বলে না।আমিও একটু এড়িয়ে চলি।একদিন ওর এক বন্ধু মারফত জানতে পারি সরন ঠিকমত ক্লাসে যাচ্ছে না,খাওয়া দাওয়া করছে না,সবসময় মনমরা হয়ে থাকে।শুনে কেমন যেন মায়া হলো।সরনকে ফোন দিয়ে দেখা করতে বললাম।আমি ওকে দেখে চমকে উঠলাম।কেমন উশকোখুষকো চেহারা হয়েছে।সরন আমার কাছে অইদিনের জন্য মাফ চাইল এটাও বলল তার আগের গফ এর সাথে তার ফিজিক্যাল রিলেশন ছিলো তাই তার চাহিদাটা এখনও রয়ে গিয়েছে। আমি সরনকে বললাম তুমি আমার সবকিছু পাবে কিন্ত তার আগে আমাকে বিয়ে করতে হবে।সরন কিছুটা চুপ হয়ে গেলো বলল ভেবে দেখি একটু।কয়েকদিন পর আমার ফাইনাল পরীক্ষার ছুটিতে গ্রামে গেলাম।সপ্তাহের মত কাটিয়ে আবার ঢাকায় ফিরছি। সরন ফোন দিয়ে বলল আমাকে বাসস্ট্যান্ডেে নিতে আসবে।বাসস্ট্যান্ড নামার পর সরন আমায় বলল হোসটেলে পরে যেও আজ আমরা বিয়ে করব।আমি কি বলব বুঝতে পারছিলাম না।সরন বলল প্লিজ না করোনা।আমি সব ব্যবস্থা করে রেখেছি।যাই হোক এক কাজি এসে বিয়ে পড়ালো ওর এক বন্ধুর বাসায়।আমরা বিয়ের পর কক্সবাজার গেলাম।সবকিছু যেন সপ্ন মনে হচ্ছি। এভাবেই চলছিল দিন।এরপর লক্ষ্য করলাম সরনের ফোন প্রায়ই বিজি থাকে সারারাত বিজি।আমাকে বলে তার বাবা,তার বন্ধু বিদেশ থেকে ফোন দেয়।দিনের পর দিন চলছে এরকম।আমি ওর ফোন দেখতে চাইলে বলে মোবাইল পাসো'নাল জিনিস।এসব দেখা যাবেনা আমি কি কখনো তোমার ফোন দেখতে চাইছি? আসলে তুমি খেত ই থেকে গেলে।খুব কান্না করেছিলাম অইদিন।এরপর অনেকের মুখে শুনতাম সরন অন্য মেয়ে নিয়ে ঘুরে। একদিন হাতেনাতে ধরাও পেলাম।সেদিন ও আমাকে রাস্তায় সবার সামনে থাপ্পড় মেরে অপমান করে তাড়িয়ে দিয়েছিলো। আমি তখন পাগলের মতো অবস্থা।আমি সরনকে বললাম আমাকে ডিভোস'দাও।সে এটা শুনে আমাকে এড়িয়ে চলে ফোনধরে না, মেসেজ এর উত্তর করে না।এর মাঝে প্রায় শুনি সরন মেয়ে নিয়ে এখানে গেছে সেখানে গেছে।সরন নিজেই একদিন আমাকে ফোন দিয়ে দেখা করতে চাইলো।আমিও গেলাম।কিছুক্ষন চুপ থেকে বলল জানি আমার কিছু খারাপ অভ্যাস আছে।আমি চাই সেগুলি থেকে বের হতে। আর এর জন্যই আমার তোমাকে দরকার অনেক তুমিই পারবে আমাকে ফেরাতে।আমি কতক্ষণ মুতি'র মত চুপ করে থাকলাম।এরপর বললাম ওকে আমি তোমার পাশে থাক। এরপর ভালোই চলছিলো।ওকে নামাজ পড়তে বলতাম।ও অনেকটাই বাধ্য হতে লাগল,আমিও সস্তি পেলাম।একদিন বলল চলো কক্সবাজার ঘুরে আসি।রাজি হলাম।ওখানে যেতে যেতে রাত হলো সরন ক্লান্ত ছিলো ঘুমিয়ে পড়লো হোটেলে যেয়ে।মাঝরাতে ওর ফোনে মেসেজ আসতে লাগলো বারবার।আমি সরনের মোবাইল লক কোড জানি অনেকবার খুলতে দেখেছি, কিন্ত আমি কখনও খুলি নি।সাহস করে খুললাম একটা মেয়ে লিখেছে জান গত পরশু রাতে তোমার সাথে যা হয়েছে আমি ভুলতে পারছিনা,তোমার শরীরের গন্ধ আমার নাকে লেগে আছে।আমার ত মাথা পাগল অবস্থা।আমি ওর সব মেসেজ, পিকচার ঘাটতে লাগ্লাম।আমি যা দেখলাম ভাষায় প্রকাশ করার মত না।অগনিত মেয়ের সাথে তার ফিজিকাল রিলেশন, সেক্স ভিডিও।আমি ভয়ে কাপতে লাগলাম এ কার সাথে শুয়ে আছি আমি।গত ১ সপ্তাহে ৩/৪ টা মেয়ের সাথে ওর ফিজিক্যাল হয়েছে।আমি হাউমাউ করে কাদতে শুরু করলাম।আমার কান্নাকাটির শব্দে সরন ঘুম থেকে জেগে৷ গেল।উঠেই দেখল ওর ফোন আমার হাতে।ওর আর বুঝতে বাকি রইলোনা।অনেক চড় থাপ্পড় লাথি পড়লো আমার শরীরে।অকথ্য ভাষায় গালাগালি।পরদিন আমি অনেক জর,গায়ে ব্যথা নিয়ে একাই ঢাকায় চলে আসি।সরনের সাথে আর যোগাযোগ করিনা।কয়দিন পর আমি বুঝতে পারলাম আমি প্রেগন্যান্ট। মাথা চক্কর দিতে লাগলো হায় আল্লাহ এখন কি হবে।কিছুদিন আগে বাবা মারা গেছে আমার।তারপর সরনের সাথে যা ঘটলো,আবার পেটে বাচ্চা আমি কোথায় গিয়ে দাড়াবো? কে আমায় সাহায্য করবে? অবশেষে সরনকে আবার ফোন দিলাম।সব খুলে বললাম।সরন আমাকে একজন ডক্টর এর কাছে নিয়ে গেল।উনি পরিক্ষা নিরিক্ষা করে বললেন আমি সত্যি প্রেগন্যান্ট। সরনকে বললাম আমাদের বিয়ের কথা তার বাসায় জানাতে।সরন বলল কিসের বিয়ে তোমার সাথে আমার কোন বিয়ে হয়নি সব কিছু ছিলো সাজানো।আমার মাথায় আকাশ ভেংগে পরলো।তাহলে এতদিন যা ছিল সব মিথ্যে? আমার পেটের সন্তান তার কি হবে? আমি কিছু ভেবে পাচ্ছিলাম না। অনেক চিন্তা করে সরনের মায়ের নাম্বার জোগাড় করে ফোন দিলাম।সেখানে ফোন দিয়ে যা শুনলাম তা শুনে আমি আর আমার অস্তিত্ব খুজে পাচ্ছিলাম না।সরনের অনেকদিন আগেই তার মামাতো বোনের সাথে বিয়ে হয়েছে,তাদের সন্তান ও আছে। আমি যেন পুরো পাগল হয়ে গেলাম। মাকে অনেকদিন পর ফোন দিলাম আমার মা খুব সহজ সরল মানুস। মা আমাকে বলল সৎ ভাই মাকে খুব জালায়, মারধর করে বাবা মারা যাওয়ার পর অত্যাচার আরও বেড়ে গেছে।মা অনেক কাদলো।বলল তোর ত কয়দিন পর ফাইনাল পরিক্ষা।তুই জলদি পাশ দিয়া একটা চাকরি নে।নিয়ে আমারে এখান থেকে নিয়ে যা নইলে দেখবি তর মা মইরা গেছে।ফোন টা রাখলাম।কত টা কান্না করেছি আর পেটের বাচ্চাটাকে হাত বুলিয়ে আদর করেছি হিসাব নেই।এরপর এ্যবরশন করলাম।থানা পুলিশ করে কাজ হলোনা কিছুই। পুলিশ শুধু টাকা বুঝে।আমাকে কে দেবে এত টাকা।কোনমত পরিক্ষা দিলাম।এরপর মানষিক সমস্যা দেখা দিল।বাচ্চাটার জন্য হাউমাউ করে কাদতাম।এভাবে ৬ মাস কেটে গেলো।সরন এখন অনেক বড় ব্যবসায়ী তার শশুড় এর টাকায়।ফ্লাট,গাড়ি সব আছে তার।আমি শুধু জ্যন্ত লাশের মত জীবন কাটাতে থাকি।এইসময় অনেক পুরনো এক বন্ধুর সাথে রাস্তায় দেখা।আমাকে দেখে বেশ বুঝতে পারছিলো আমি ভালো নেই। স্কুল জিবনে এই ছেলেটি আমাকে অনেক পছন্দ করতো কিন্ত কখনও মুখে বলেনি।আমি বুঝতাম।আমি ওকে আমার জিবনে ঘটে যাওয়া সবকিছু জানালাম। সেদিন ওর চোখে আমার জন্য মায়া ছিলো নাকি করুনা নাকি ঘৃনা আমি বুঝিনি।কিন্ত ও আমাকে সবসময় যতটা পারত সময় দিত।আমাকে বুঝাতো। আমি আস্তে আস্তে কিছুটা সাভাবিক হতে শুরু করি।অনুভব করলাম ও আমাকে ভালোবাসে কিন্ত বুঝেও কিছু বলতাম না।কিছুদিন পর আমার জব হলো।মাকে আমার কাছে নিয়ে আসলাম।সবকিছু ভালোই চলছিল এর মাঝে আমার বন্ধুটি আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়।আমি না করি।যাই হোক ১ বছর পর আমাদের বিয়ে হয়।ও আমাকে সুখেই রেখেছে।বিয়ের প্রায় ২ বছর হতে চলেছে ও কখনো ১ দিনের জন্য আমাকে আমার অতীত মনে করাইনি।আমি এখন ৭ মাসের প্রেগন্যান্ট। খুব যত্ন করে ও আমার।সরন এখন অনেক খোজে আমায়।ওর ব্যবসায় লস খেতে খেতে পথের ফকির হয়ে গেছে।ওর বউ আর ওর সাথে থাকেনা।আমাকে ফেসবুকে অনেক মেসেজ করে, মাফ চায় আমি কোন উত্তর করিনা। আল্লাহ বিচার করেছেন। মেয়েদের কাছে আমার একটাই অনুরোধ ভালোবাসা দোষের না তবে বুঝে শুনে ভালোবাসুন যাতে কাউকে আমার মত যন্ত্রনা, দুঃখ পেতে না হয়,একটা জীবন বলি দিতে না হয়।