-ওই মিস্টার এদিকে শোনো।
-জ্বি বলেন।
-সিম চেঞ্জ করছো?
-হুম।
-নাম্বারটা বলো তো।
-না....
-কি বললা[চোখ বড় বড় করে]
-বলছি তো.01700****97
-হুম গুড।
-এখন থেকে আবার রাতে কল দিবেন!
-আমার ইচ্ছা।
-আচ্ছা,এখন আসি তবে।
-কোথায় যাও,ফুচকা খাবো চলো।
-না খেলে হয়না!
-নাহ্।
.
অতঃপর বালিকার সাথে গেলাম ফুচকা খেতে।
ফুচকা খাওয়া শেষে বিলটা pay করে বাড়ির দিকে রওনা হলাম।
.
রাতে শুয়ে ফেসবুক ঘুরছি,এমন সময় বালিকার ফোন।
-হ্যালো রফি!
-হুম।
-খেয়েছো?
-হুম।
-শরীর ভালো আছেতো?
-হুম।
-কাল ভার্সিটিতে আসবা?
-হুম।
-রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ো,এখন রাখি বাই।
টুট..টুট
মীমের এটা প্রতিদিনকার রুটিন।
৭দিন আগে সিম চেঞ্জ করেছিলাম শুধুমাত্র বালিকার জন্যই।
মেয়েটাকে কিছু বলারো কোনো উপায় নেই।
প্রথমবার যখন নাম্বার নিয়েছিলো,সাথে ভার্সিটির বড় ভাইদের নিয়ে এসেছিলো।
তাই ভয়ে এখন শুধু অবুঝ ছেলের মতন শয়ে যেতে হয়।
*
পরেরদিন ভার্সিটিতে আমাদের ক্লাসে একটা নতুন মেয়ে দেখা পেলাম।
মেয়বি নতুন ভর্তি হয়েছে।
অজানা এক ভালোলাগা কাজ করলো।
পুরো ক্লাসে সেই নতুন বালিকাকে দেখেই কাটিয়ে দিলাম।
স্যার যখন বেড় হয়ে গেলেন তখন সাহস করে নতুন নামনা জানা বালিকার উদ্দেশ্যে পা বাড়ালাম।
-হাই আমি রফি
-আমি ফারিহা
-ওয়াও,নাইছ নেম।তোমার মতন তোমার নামটাও অনেক......
[মীম এসে কলার টানতে টানতে বাহিরে নিয়ে এলো]
-বান্দর ছেলে,ওর সাথে কিসের কথা তোর?
-এমনি নতুন এসেছে,তাই বন্ধুত্ব করতে চাইছিলাম।
-এত্ত গুলা ছেলে বন্ধু তাতে তোর হয়না!
-মেয়ে বন্ধু থাকলে সমস্যা কি!
-না থাকলে সমস্যা কি!
-তাতে তোমার কি!
-ঠাসসসসস...বুঝেছিস আমার কি!
-হুম[গালে হাত দিয়ে]
-এখন বাড়ি যা,আর যদি কোনো মেয়ের পেছনে দেখি তবে চড়ের বদলে আরো বেশী কিছু পাবি।
-আচ্ছা।
-আর শোন,রাতে কল দিলে আর যেন (হুম,হুম) কথা না শুনি।ভালো ভাবে কথা বলবি।আর আমারো খোঁজ-খবর নিবি।
-আচ্ছা।
*
মেয়ের হাতে মাড় খেয়েছি।
কথাটা যদি বাতাসের সাথে ছড়িয়ে পরে তবে শিওর দ্বিতীয় দিন বোরখা ধারণ করে ভার্সিটিতে আসলে হবে।
কেউ যাতে কিছু বুঝতে না পারে,তাই "কিছুই হয়নি" এমন ভাব ধরে ভার্সিটি থেকে বেড়িয়ে আসলাম।
.
সারাদিন ভালোই কাটলো কিন্তু টেনশন শুরু হলো রাতে।
মীম ফোন দিলে কি বলবো!কি কি প্রশ্ন করবো!
ভাবতে ভাবতে বালিকার কল....
-হ্যালো রফি।
-হুম কেমন আছেন?
-তুমি করে বলো।
-কেমন আছো?
-ভালো,তুমি?
-ভালো।ডিনার করেছো?
-নাহ্
-ওওও,আর কি বলবো!
-জানিনা,কিন্তু আমার যদি ভালো না লাগে শিওর কাল তোমার ভাগ্যে দুঃখ আছে।
-মীম।
-হুম।
-চলোনা কোথাও হারিয়ে যাই দুজনায়!
-কোথায়?
-কোনো এক অজানায়,যেখানে তুমি আমি আর থাকবে এক ঝাক পাখি।যখন আমি তোমায় জড়িয়ে ধরে গান গাইবো তখন কলরব করে তাল মেলাবে পাখি গুলাও।
-ওয়াও।
-এরকম চলবে?
-ধ্যাত।
-কি হলো!
-তুমি একটা যা..তা।
-এখন রাখি?
-কাল ১১টায় ভার্সিটিতে আসবা।
-কিন্তু ১০টায় তো ক্লাস শুরু।
-ক্লাস করবে কে!ঘুরতে যাবো।
-কিন্তু....
-চোপ।কালো শার্ট পড়ে আসবা।
-আচ্ছা।
টুট..টুট
.
আব্বু যদি জানতে পারে ভার্সিটি বাদ দিয়ে মেয়ের সাথে ঘুরতে গেছি,শিওর বাড়ি থেকে বেড় করে দিবে।
কিন্তু এই বালিকাকে এইটা বোঝায় কে!
রাতে লং একটা ঘুম দিয়ে সকাল দশটায় উঠলাম।
ফ্রেস হতে মুটামাটি ২০মিনিট লেগে গেলো।
এমন সময় আম্মুর আগমন...
-কোথায় যাস?
-ভার্সিটিতে।
-বাজে কয়টা?
-১০টা২৫।
-আচ্ছা যা,আমিও তোর আব্বুর সাথে একটু বাহিরে যাবো।ফিরতে দেরী হতে পারে।
-আচ্ছা,গেলাম আমি এখন।
*
ভার্সিটিতে বালিকা আমার আগেই উপস্থিত।
আমায় দেখেই সুন্দর একটা হাসি দিলো।
যেটা ছিলো আমার সাইলেন্ট ক্রাশ।
তবে ওপেন ক্রাশ খেলাম যখন বালিকার পরনে হলুদ শাড়ীর সাথে ঠোঁটে হালকা গোলাপি লিপ গ্লোজের আবরণ চোখে টানা মাশকারা আঁকা দেখলাম।
হা করে তাকিয়ে আছি।
যদি কেউ বলে এভাবি তাকিয়ে কতক্ষণ দেখতে পারবে,"আমি বলবো সারাজিবন".
-এভাবে তাকিয়ে থাকার কিছু নেই।
[কিছুটা ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেলাম।]
-না..মানে হুম।
-চলো এখন।
-কোথায়।
-মার্কেটে যাবো।
-ক্যান?
-তোমায় সাথে করে ঘুরবো।
-ঘুরার অনেক জায়গা আগে।
-হুম,কিন্তু শপিংও করতে হবে।
[খাইছেরে টাকা মনেহয় আজ গেছে,মনে মনে]
-চলো নদীর ধারে কোথাও ঘুরতে যাই।
-কাল কিন্তু তবে শপিং এ যাবো।
-আচ্ছা শিওর।
*
অতঃপর বালিকার হাত ধরে রওনা হলাম পদ্মা নদীর উদ্দেশ্যে।
এই রোদের মঝে গাছের আড়ালে বসে নদীর পানি দেখা মজাই অন্যরকম।
.
-রফি।
-হুম।
-তোমার কোলে মাথা রাখি।
-এএহ্,আমি কি তোমার বিয়ে করা জামাই নাকি।
-হুম,হিহিহি।
-কিইইই।বললেই হলো।
-হুম,কবুল বললেই হয়ে যাবে।
-তোমারে বিয়ে করবে কে!
-তোর কারে বিয়ে করবা।
-ফারি....
-ঠাসসসস।
-না থাক,তুমারেই করবো।
-গুড বয়,এবার কোলে মাথা রাখতে দাও।
[মজা করে বলতে গিয়েও মাড় খেলাম।
অসহায়ের মতন মীমের চুলে বিলি কেটে দিচ্ছি আর মীম আমার কোলে মাথা রেখে শুয়ে আছে।
.
অতঃপর যাহা হইলো তাহা ভাষায় প্রকাশ করতেও ভয় লাগছে।
*
*
-আ...আব্বু-আম্মু তোমরা!(আমি)
[মীম তাড়াতাড়ি উঠে দাঁড়ালো]
-তো বাবা ভার্সিটি কেমন চলছে?(আম্মু)
-যেতে চেয়েছিলাম,যাইনি।(আমি)
-হুম,সাথে এমন পরী থাকলে কাড়ি বা ভার্সিটিতে যেতে মন চায়।(আম্মু)
[মীম মিট-মিটিয়ে হাসছে]
-বাসায় যাই চলেন(আমি)
-বৌমার সাথে পরিচর করিয়ে দিবিনা!তোমার নাম কি মামনি।(আমি)
-মীম
-বাহ্,খুব সুন্দর নামতো(আম্মু)
-তো,তোমার বৌমাকে বাসায় নিয়ে যাবেনা(আব্বু)
-হুম সেটা তো যাবোই।রফি যা দুইটা রিক্সা ঠিক কর(আম্মু)
-ওর যেতে হবেনা।আর তোমরা যা ভাবছো তা নয়(আমি)
[সবাই অগ্নি দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকালো]
-ধুর,যাচ্ছিতো.....
*
আমি আর আব্বু এক রিক্সায় মীম আম্মু অন্য রিক্সায়।
ভয়ে গলা শুকিয়ে যাচ্ছে।
বাড়ি গিয়ে নিশ্চই বনবাসে পাঠাবে।
.
অতঃপর....
বাড়ি ফিরে মীম আর আম্মু রান্নাঘরে চলে গেলী গেলো রান্না করতে।
দুনিয়ার যত আজাইরা গল্প আছে সেগুলা নিয়ে ব্যস্ত দুজন।
আমি অসহায়ের মতন টিভির রুমে এসে টিভি দেখছি,এমন সময় আব্বুর আগমন.....
-কতদিন ধরে চলছে?
-কি চলছে?
-তোদের প্রেম।
-সত্যি প্রেম না।
-তবে?
-আমার সাথে পড়ে,ব্যস এতটুকুই।
-ওওও,এত্ত গভীর সম্পর্ক।
-(......)
<কিছুক্ষণ নিশ্চুপ>
-রফি।
-হুম আব্বু।
-বিয়েটা দিয়ে দিই।
-কিইইইই!
-এভাবে তাকাচ্ছিস কেনো!তোর মতন দশটাকে বসিয়ে খাওয়ানোর ক্ষমতা এখনো আছে আমার।
-কিন্তু আব্বু ওই মেয়ে আমার জিবনের সব খুশি শেষ করে ফেলবে।
-দেখ আমার সামনে ভাব নিতে হবেনা।মেয়েটাকে আমার অনেক পছন্দ হয়েছে।
[এমন সময় আম্মুর আগমন,পেছন পেছন মীমও।
কিছুক্ষণ পর....
আব্বু-আম্মু লাঞ্চ করছে আর মীমকে তাঁর ফ্যামিলি সম্পর্কে প্রশ্ন করছে।
বালিকা খুবি মিষ্টি মিষ্টি করে তাহার জবাব দিয়ে যাচ্ছে।
.
খাওয়া-দাওয়ার পর বালিকা এমন বিহেভ করছে যেন বাড়িটা তাহার,আমি বেড়াতে এসেছি।
যার উদাহরণ স্বরূপ..আর পানি লাগবে কিনা,তোয়ালে এগিয়ে দেওয়া,প্লেট গুলো রান্না ঘরে নিয়ে যাওয়া ইত্যাদি।
অতঃপর নিজের রুমে চলে আসলাম।
কিছুক্ষণ বাদে বিনা নকে বালিকাও আমার রুমে প্রবেশ করলো।
-বাহ্,তোমার বেডরুমটা তো বেশ আগোছালো।
-হুম আমার গোছাতে ভালো লাগেনা।
-চিন্তা করোনা বিয়ের পর আমি গুছিয়ে দেবো।
-হাহ্,তোমারে বিয়ে করবে কে!
-অভাব নেই,তবে তুমি করলেই চলবে।
-আমি করবোনা।
-চড়েত কথা মনে নেই!
-ভয় দেখাও ক্যান!
-ভালবাসি তাই।
-এত্ত ছেলে থাকতে আমাকেই চোখে পড়লো!
-একটা কথা বলবো[নরম শুরে]
-হুম বলো।
-আমি দেখতে কি খুবি পঁচা!
-নাহ্।
-তবে আমায় ভালবাসো না ক্যান!
-ভয় হয়।
-কিসের ভয়!
-হারিয়ে ফেলার।
-আমি হারাবোনা[নরম শুরে]
-জানো আমি যেটাই ভালবাসি সেটাই হারিয়ে যায়।
-আগে কাওকে ভালবাসতা?
-নাহ্।
-তবে!
-আমার একটা বেড়ালের বাচ্চা ছিলো।ঠিক তোমার মতন দেখতে।অনেক আদর করতাম।এক সময় বাচ্চা টা বড় হয়ে যায়।আর অন্য বেড়ালের সাথে পাশের বাসায় চলে যায়।
-পাগল,ছাগল,ইন্দুর।
[বলেই মারতে গেলো]
আমি ভোঁ দৌড়।
পুরো ঘর জুড়ে দুজনে দৌড়াতে লাগলাম।
মুটামাটি ঘরের দফারফা হয়ে গেছে।
যখন ক্লান্ত হয়ে গেলাম তখন দুজন থামলাম।
একটুপর আব্বু-আম্মু মীমকে বাড়ি দিয়ে আসতে বললো।
বেচারি মন খারাপ করে আমার সাথে করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলো।
পুড়ো পথে একটা কথাও বললোনা।
বালিকার বাসার সামনে চলে আসলাম......
-রফি এদিকে এসো।
-হুম...কি!
-(......)
*
যাহা হইলো তাহা নিয়ে আমি পুরোই টাস্কি।
বাড়ি ফিরে শুধু সেই মুহূর্তেরি ভাবনায় পরে রইলাম।
আব্বু-আম্মু পাশের রুমে রাতে আমায় নিয়ে কি যেন কথা বলছে।
তাই দরজার কাছে গিয়ে আরি পাতলাম।
কথাগুলো ছিলো এমন.....
-বাবুর আম্মু মীমের বাসায় খুব শীঘ্রই বিয়ের প্রস্তাব দেওয়াটা প্রয়োজন।
-ওরা আগে গ্রাজুয়েট হোক।
-নাহ্,আবেগে পরে যদি পালিয়ে বিয়ে করে ফেলে!
-হুম সেটাও ঠিক।আচ্ছা তবে কালকেই কথা বলে আসি!
-হুম,আমিও সেটাই ভাবছি।
*
সেদিন রাতে বালিকা একটা মিস কলো দিলোনা।
আমিও কিছুতেই কিছু বুঝে উঠতে পারছিনা।
মন জুড়ে শুধু তখন একটাই নাম "মীম"
<তবে কি আমি তাঁকে ভালবেসে ফেলেছি
-জ্বি বলেন।
-সিম চেঞ্জ করছো?
-হুম।
-নাম্বারটা বলো তো।
-না....
-কি বললা[চোখ বড় বড় করে]
-বলছি তো.01700****97
-হুম গুড।
-এখন থেকে আবার রাতে কল দিবেন!
-আমার ইচ্ছা।
-আচ্ছা,এখন আসি তবে।
-কোথায় যাও,ফুচকা খাবো চলো।
-না খেলে হয়না!
-নাহ্।
.
অতঃপর বালিকার সাথে গেলাম ফুচকা খেতে।
ফুচকা খাওয়া শেষে বিলটা pay করে বাড়ির দিকে রওনা হলাম।
.
রাতে শুয়ে ফেসবুক ঘুরছি,এমন সময় বালিকার ফোন।
-হ্যালো রফি!
-হুম।
-খেয়েছো?
-হুম।
-শরীর ভালো আছেতো?
-হুম।
-কাল ভার্সিটিতে আসবা?
-হুম।
-রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ো,এখন রাখি বাই।
টুট..টুট
মীমের এটা প্রতিদিনকার রুটিন।
৭দিন আগে সিম চেঞ্জ করেছিলাম শুধুমাত্র বালিকার জন্যই।
মেয়েটাকে কিছু বলারো কোনো উপায় নেই।
প্রথমবার যখন নাম্বার নিয়েছিলো,সাথে ভার্সিটির বড় ভাইদের নিয়ে এসেছিলো।
তাই ভয়ে এখন শুধু অবুঝ ছেলের মতন শয়ে যেতে হয়।
*
পরেরদিন ভার্সিটিতে আমাদের ক্লাসে একটা নতুন মেয়ে দেখা পেলাম।
মেয়বি নতুন ভর্তি হয়েছে।
অজানা এক ভালোলাগা কাজ করলো।
পুরো ক্লাসে সেই নতুন বালিকাকে দেখেই কাটিয়ে দিলাম।
স্যার যখন বেড় হয়ে গেলেন তখন সাহস করে নতুন নামনা জানা বালিকার উদ্দেশ্যে পা বাড়ালাম।
-হাই আমি রফি
-আমি ফারিহা
-ওয়াও,নাইছ নেম।তোমার মতন তোমার নামটাও অনেক......
[মীম এসে কলার টানতে টানতে বাহিরে নিয়ে এলো]
-বান্দর ছেলে,ওর সাথে কিসের কথা তোর?
-এমনি নতুন এসেছে,তাই বন্ধুত্ব করতে চাইছিলাম।
-এত্ত গুলা ছেলে বন্ধু তাতে তোর হয়না!
-মেয়ে বন্ধু থাকলে সমস্যা কি!
-না থাকলে সমস্যা কি!
-তাতে তোমার কি!
-ঠাসসসসস...বুঝেছিস আমার কি!
-হুম[গালে হাত দিয়ে]
-এখন বাড়ি যা,আর যদি কোনো মেয়ের পেছনে দেখি তবে চড়ের বদলে আরো বেশী কিছু পাবি।
-আচ্ছা।
-আর শোন,রাতে কল দিলে আর যেন (হুম,হুম) কথা না শুনি।ভালো ভাবে কথা বলবি।আর আমারো খোঁজ-খবর নিবি।
-আচ্ছা।
*
মেয়ের হাতে মাড় খেয়েছি।
কথাটা যদি বাতাসের সাথে ছড়িয়ে পরে তবে শিওর দ্বিতীয় দিন বোরখা ধারণ করে ভার্সিটিতে আসলে হবে।
কেউ যাতে কিছু বুঝতে না পারে,তাই "কিছুই হয়নি" এমন ভাব ধরে ভার্সিটি থেকে বেড়িয়ে আসলাম।
.
সারাদিন ভালোই কাটলো কিন্তু টেনশন শুরু হলো রাতে।
মীম ফোন দিলে কি বলবো!কি কি প্রশ্ন করবো!
ভাবতে ভাবতে বালিকার কল....
-হ্যালো রফি।
-হুম কেমন আছেন?
-তুমি করে বলো।
-কেমন আছো?
-ভালো,তুমি?
-ভালো।ডিনার করেছো?
-নাহ্
-ওওও,আর কি বলবো!
-জানিনা,কিন্তু আমার যদি ভালো না লাগে শিওর কাল তোমার ভাগ্যে দুঃখ আছে।
-মীম।
-হুম।
-চলোনা কোথাও হারিয়ে যাই দুজনায়!
-কোথায়?
-কোনো এক অজানায়,যেখানে তুমি আমি আর থাকবে এক ঝাক পাখি।যখন আমি তোমায় জড়িয়ে ধরে গান গাইবো তখন কলরব করে তাল মেলাবে পাখি গুলাও।
-ওয়াও।
-এরকম চলবে?
-ধ্যাত।
-কি হলো!
-তুমি একটা যা..তা।
-এখন রাখি?
-কাল ১১টায় ভার্সিটিতে আসবা।
-কিন্তু ১০টায় তো ক্লাস শুরু।
-ক্লাস করবে কে!ঘুরতে যাবো।
-কিন্তু....
-চোপ।কালো শার্ট পড়ে আসবা।
-আচ্ছা।
টুট..টুট
.
আব্বু যদি জানতে পারে ভার্সিটি বাদ দিয়ে মেয়ের সাথে ঘুরতে গেছি,শিওর বাড়ি থেকে বেড় করে দিবে।
কিন্তু এই বালিকাকে এইটা বোঝায় কে!
রাতে লং একটা ঘুম দিয়ে সকাল দশটায় উঠলাম।
ফ্রেস হতে মুটামাটি ২০মিনিট লেগে গেলো।
এমন সময় আম্মুর আগমন...
-কোথায় যাস?
-ভার্সিটিতে।
-বাজে কয়টা?
-১০টা২৫।
-আচ্ছা যা,আমিও তোর আব্বুর সাথে একটু বাহিরে যাবো।ফিরতে দেরী হতে পারে।
-আচ্ছা,গেলাম আমি এখন।
*
ভার্সিটিতে বালিকা আমার আগেই উপস্থিত।
আমায় দেখেই সুন্দর একটা হাসি দিলো।
যেটা ছিলো আমার সাইলেন্ট ক্রাশ।
তবে ওপেন ক্রাশ খেলাম যখন বালিকার পরনে হলুদ শাড়ীর সাথে ঠোঁটে হালকা গোলাপি লিপ গ্লোজের আবরণ চোখে টানা মাশকারা আঁকা দেখলাম।
হা করে তাকিয়ে আছি।
যদি কেউ বলে এভাবি তাকিয়ে কতক্ষণ দেখতে পারবে,"আমি বলবো সারাজিবন".
-এভাবে তাকিয়ে থাকার কিছু নেই।
[কিছুটা ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেলাম।]
-না..মানে হুম।
-চলো এখন।
-কোথায়।
-মার্কেটে যাবো।
-ক্যান?
-তোমায় সাথে করে ঘুরবো।
-ঘুরার অনেক জায়গা আগে।
-হুম,কিন্তু শপিংও করতে হবে।
[খাইছেরে টাকা মনেহয় আজ গেছে,মনে মনে]
-চলো নদীর ধারে কোথাও ঘুরতে যাই।
-কাল কিন্তু তবে শপিং এ যাবো।
-আচ্ছা শিওর।
*
অতঃপর বালিকার হাত ধরে রওনা হলাম পদ্মা নদীর উদ্দেশ্যে।
এই রোদের মঝে গাছের আড়ালে বসে নদীর পানি দেখা মজাই অন্যরকম।
.
-রফি।
-হুম।
-তোমার কোলে মাথা রাখি।
-এএহ্,আমি কি তোমার বিয়ে করা জামাই নাকি।
-হুম,হিহিহি।
-কিইইই।বললেই হলো।
-হুম,কবুল বললেই হয়ে যাবে।
-তোমারে বিয়ে করবে কে!
-তোর কারে বিয়ে করবা।
-ফারি....
-ঠাসসসস।
-না থাক,তুমারেই করবো।
-গুড বয়,এবার কোলে মাথা রাখতে দাও।
[মজা করে বলতে গিয়েও মাড় খেলাম।
অসহায়ের মতন মীমের চুলে বিলি কেটে দিচ্ছি আর মীম আমার কোলে মাথা রেখে শুয়ে আছে।
.
অতঃপর যাহা হইলো তাহা ভাষায় প্রকাশ করতেও ভয় লাগছে।
*
*
-আ...আব্বু-আম্মু তোমরা!(আমি)
[মীম তাড়াতাড়ি উঠে দাঁড়ালো]
-তো বাবা ভার্সিটি কেমন চলছে?(আম্মু)
-যেতে চেয়েছিলাম,যাইনি।(আমি)
-হুম,সাথে এমন পরী থাকলে কাড়ি বা ভার্সিটিতে যেতে মন চায়।(আম্মু)
[মীম মিট-মিটিয়ে হাসছে]
-বাসায় যাই চলেন(আমি)
-বৌমার সাথে পরিচর করিয়ে দিবিনা!তোমার নাম কি মামনি।(আমি)
-মীম
-বাহ্,খুব সুন্দর নামতো(আম্মু)
-তো,তোমার বৌমাকে বাসায় নিয়ে যাবেনা(আব্বু)
-হুম সেটা তো যাবোই।রফি যা দুইটা রিক্সা ঠিক কর(আম্মু)
-ওর যেতে হবেনা।আর তোমরা যা ভাবছো তা নয়(আমি)
[সবাই অগ্নি দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকালো]
-ধুর,যাচ্ছিতো.....
*
আমি আর আব্বু এক রিক্সায় মীম আম্মু অন্য রিক্সায়।
ভয়ে গলা শুকিয়ে যাচ্ছে।
বাড়ি গিয়ে নিশ্চই বনবাসে পাঠাবে।
.
অতঃপর....
বাড়ি ফিরে মীম আর আম্মু রান্নাঘরে চলে গেলী গেলো রান্না করতে।
দুনিয়ার যত আজাইরা গল্প আছে সেগুলা নিয়ে ব্যস্ত দুজন।
আমি অসহায়ের মতন টিভির রুমে এসে টিভি দেখছি,এমন সময় আব্বুর আগমন.....
-কতদিন ধরে চলছে?
-কি চলছে?
-তোদের প্রেম।
-সত্যি প্রেম না।
-তবে?
-আমার সাথে পড়ে,ব্যস এতটুকুই।
-ওওও,এত্ত গভীর সম্পর্ক।
-(......)
<কিছুক্ষণ নিশ্চুপ>
-রফি।
-হুম আব্বু।
-বিয়েটা দিয়ে দিই।
-কিইইইই!
-এভাবে তাকাচ্ছিস কেনো!তোর মতন দশটাকে বসিয়ে খাওয়ানোর ক্ষমতা এখনো আছে আমার।
-কিন্তু আব্বু ওই মেয়ে আমার জিবনের সব খুশি শেষ করে ফেলবে।
-দেখ আমার সামনে ভাব নিতে হবেনা।মেয়েটাকে আমার অনেক পছন্দ হয়েছে।
[এমন সময় আম্মুর আগমন,পেছন পেছন মীমও।
কিছুক্ষণ পর....
আব্বু-আম্মু লাঞ্চ করছে আর মীমকে তাঁর ফ্যামিলি সম্পর্কে প্রশ্ন করছে।
বালিকা খুবি মিষ্টি মিষ্টি করে তাহার জবাব দিয়ে যাচ্ছে।
.
খাওয়া-দাওয়ার পর বালিকা এমন বিহেভ করছে যেন বাড়িটা তাহার,আমি বেড়াতে এসেছি।
যার উদাহরণ স্বরূপ..আর পানি লাগবে কিনা,তোয়ালে এগিয়ে দেওয়া,প্লেট গুলো রান্না ঘরে নিয়ে যাওয়া ইত্যাদি।
অতঃপর নিজের রুমে চলে আসলাম।
কিছুক্ষণ বাদে বিনা নকে বালিকাও আমার রুমে প্রবেশ করলো।
-বাহ্,তোমার বেডরুমটা তো বেশ আগোছালো।
-হুম আমার গোছাতে ভালো লাগেনা।
-চিন্তা করোনা বিয়ের পর আমি গুছিয়ে দেবো।
-হাহ্,তোমারে বিয়ে করবে কে!
-অভাব নেই,তবে তুমি করলেই চলবে।
-আমি করবোনা।
-চড়েত কথা মনে নেই!
-ভয় দেখাও ক্যান!
-ভালবাসি তাই।
-এত্ত ছেলে থাকতে আমাকেই চোখে পড়লো!
-একটা কথা বলবো[নরম শুরে]
-হুম বলো।
-আমি দেখতে কি খুবি পঁচা!
-নাহ্।
-তবে আমায় ভালবাসো না ক্যান!
-ভয় হয়।
-কিসের ভয়!
-হারিয়ে ফেলার।
-আমি হারাবোনা[নরম শুরে]
-জানো আমি যেটাই ভালবাসি সেটাই হারিয়ে যায়।
-আগে কাওকে ভালবাসতা?
-নাহ্।
-তবে!
-আমার একটা বেড়ালের বাচ্চা ছিলো।ঠিক তোমার মতন দেখতে।অনেক আদর করতাম।এক সময় বাচ্চা টা বড় হয়ে যায়।আর অন্য বেড়ালের সাথে পাশের বাসায় চলে যায়।
-পাগল,ছাগল,ইন্দুর।
[বলেই মারতে গেলো]
আমি ভোঁ দৌড়।
পুরো ঘর জুড়ে দুজনে দৌড়াতে লাগলাম।
মুটামাটি ঘরের দফারফা হয়ে গেছে।
যখন ক্লান্ত হয়ে গেলাম তখন দুজন থামলাম।
একটুপর আব্বু-আম্মু মীমকে বাড়ি দিয়ে আসতে বললো।
বেচারি মন খারাপ করে আমার সাথে করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলো।
পুড়ো পথে একটা কথাও বললোনা।
বালিকার বাসার সামনে চলে আসলাম......
-রফি এদিকে এসো।
-হুম...কি!
-(......)
*
যাহা হইলো তাহা নিয়ে আমি পুরোই টাস্কি।
বাড়ি ফিরে শুধু সেই মুহূর্তেরি ভাবনায় পরে রইলাম।
আব্বু-আম্মু পাশের রুমে রাতে আমায় নিয়ে কি যেন কথা বলছে।
তাই দরজার কাছে গিয়ে আরি পাতলাম।
কথাগুলো ছিলো এমন.....
-বাবুর আম্মু মীমের বাসায় খুব শীঘ্রই বিয়ের প্রস্তাব দেওয়াটা প্রয়োজন।
-ওরা আগে গ্রাজুয়েট হোক।
-নাহ্,আবেগে পরে যদি পালিয়ে বিয়ে করে ফেলে!
-হুম সেটাও ঠিক।আচ্ছা তবে কালকেই কথা বলে আসি!
-হুম,আমিও সেটাই ভাবছি।
*
সেদিন রাতে বালিকা একটা মিস কলো দিলোনা।
আমিও কিছুতেই কিছু বুঝে উঠতে পারছিনা।
মন জুড়ে শুধু তখন একটাই নাম "মীম"
<তবে কি আমি তাঁকে ভালবেসে ফেলেছি
0 Comments