সুমিঃ ওই শুনছো? আজ তারাতারি অফিস থেকে আসবা?
সানিঃ কেন কেন??
সুমিঃ আজ বিকেলে একটু বেরাতে যাবো। কত দিন হলো বাহিরে যাই না। এই চার দেয়ালের মধ্যে থাকতে থাকতে আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে।তাই খোলা আকাশের নিচে একটু প্রান ভরে নিঃশ্বাস নিতে চাই?

সানিঃ ওরে আমার সোহাগি বউরে?? শুধু ঢংগের কথা যানে। (তার মন বোঝার জন্যে একটু রেগে বলে ) আমি আসতে পারবো না। আজ অফিসের অনেক কাজ। আসতে রাত হয়ে যাবে বুজলে??
সুমিঃ মন খারাপ করে চুপ করে সোফায় বশে পরলো। অভিমান সুরে ঠিক আছে। আসতে হবেন না??যে দিন আমি মারা যাবো সেদিন তো ঠিকি বাশা থেকে বের করবে।

সানিঃ নিরবে শুধু তার কথাগুলো শুনছিলো। সুমির চোখ দিয়ে পানি ঝর ঝর করে ঝরছে। সানি তাকে আলতোভাবে জোরিয়ে ধরে,, এই পাগলি কাঁদছো কেন হুম?? চোখের পানি মুছে দিয়ে মিষ্টি একটি পাপ্পি দিলো। আমি তো তোমার মন বোঝার জন্যে বলছি। আসলে তুমি কিছুই বুঝো না।

সুমিঃ আবেগে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদছে আর বলছে,,তুমি আমার সাথে মাঝে মাঝে এমন করো কেন? তুমি আমাকে একটু ও ভালোবাসো না।
সানিঃ হাসতে হাসতে বলে তাই,, তো,,তোমাকে ভালোবাসতে হলে কি করতে হবে শুনি??

সুমিঃ আমাকে আজ বিকেলে বাহিরে নিয়ে যেতে হবে??
সানিঃ ওকে মহারানী আপনার কথাই শিরোধার্য। তোমাকে নিয়ে যেতে পারি,, তবে একটা সর্ত আছে??
সুমিঃ কাঁদা কাঁদা সুরে কি সর্ত বলো??
সানিঃ সর্ত হলো এখন তোমাকে হাসতে হবে কি পারবা??
সুমিঃ এখন কি করে হাসবে?? তাই সানি তাকে কাতু কুতি দিয়ে দুজনেই হি হি হি হি হি করে হাসলো।
সুমিঃ আর ঢং করতে হবে না। দেরি হয়ে যাচ্ছে আফিসে যাউ।
সানিঃ আমাকে রেডি করে দেউ।

সুমিঃ তোমাকে ছোট বাচ্চাদের মত রেডি,, মাঝে মাঝে ভাত খায়ে দিতে হয় এসব অভ্যাস কবে পরিবর্তন হবে??
সুমি তাকে প্রতি দিনের মত ব্লেজার গায়ে পরিয়ে দিচ্ছে আর এসব বলছে।
সানিঃ মিষ্টি মিষ্ট হাসছে আর বলছে,, তুমি থাকতে জীবনে ও এই অভ্যাস পরিবর্তন হবে না, বুজলে জানু??
সুমিঃ এতো বুঝার দরকার নেই।

Now,,you are ready so you can go sweet my heart,,
সানিঃ ও জান তুমি আমায় বিদায় দিবে না??
সুমিঃ হুম। তার গলাটা জরিয়ে ধরে উম্মম্মম্মম্মম্মম্মম­্মম্মমাহ দিলো মানে পাপ্পি দিলো। এবার হইছে??
সানিঃ হুম। জানো,,প্রতিদিনের মত তোমার মুখের এই মিষ্টি ছোঁয়া না পেলে,, মনে হয়,, চারিদিকের এই হাস্য-উজ্জল প্রকৃতিটা কেমন যেনি গুমরা মুখি হয়ে যায়। নিজের কাছে তখন অসস্তি,,অসস্তি লাগে। প্রতিদিন এমন সময় পাপ্পি, দিতে কখনো ভুলে যাবে না তো বলো?

সুমিঃ সুমি অনেক হাসছে,, হাসতে হাসতে বলে,,আমার পাগল রে। আমি মাঝে মধ্যে এই ভুলটা আর করবো না। এই বলে তার গলাটা আবার জরিয়ে ধরে কয়েকটা পাপ্পি দিয়ে বলে, যাউ আজ তোমার দিনটা আরও বেশি ভালো যাবে।
তাদের বিয়ের বয়স ৩ বছর কিন্তু তাদের ভালোবাসা দেখে মনে হয় নতিন দম্পতি।
তারা দুজন দুজনকে অনেক ভালোবাসে। সুমি অনেক অভিমানি মেয়ে তাই সানি তার সাথে কথা একটু হিসাব করেই বলে। কথা বলার এদিক সেদিক হলেই সুমি মন খারাপ করে থাকে আর অভিমান করবেই না বা কেন?? সে যে,, মা, বার এক মাত্র আদরের মেয়ে। সুমি দেখতে হ্যাব্বি সুন্দরি। তাই তো সানি এক পলক দেখেই ওর পরিবারে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। সানিও বাবা,মার একমাত্র ছেলে তাই উভাই এই বিয়েতে রাজি হয়ে যায়। আসলে,, সানির কপাল ভালো তাই এরকম সুন্দরি মেয়ে পেয়েছে।

সানি আফিসে কাজের ফাকে সুমি কে কোল দে~~~
সুমিঃ হ্যালো।
সানিঃ কি করছো?
সুমিঃ শুয়ে আছি। তুমি কখন আসবে?
সানিঃ এই তো আর একটু পরে। জান একটা কাজ করবে?
সুমিঃ কি কাজ জান?
সানিঃ তুমি দেখো,,আলমারিতে একটা আকাশী রঙের সার্ট আছে ওইটা প্লিজ একটু আয়রন করো না জান? বিকেলে ওই সার্ট পরে তোমাকে নিয়ে বেরাতে যাবো।
সুমিঃ ওকে। তুমি অফিসের কাজ সেরে তারাতারি চলে এসো। আমি আয়রন করে রাখছি।

সানিঃ ওরে আমার লক্ষি জান। উম্মম্মম্মম্মম্মা।
সুমিঃ উম্মম্মম্মম্মমা জান। এখন রাখি।। বাই।।
সুমি তার সার্ট আলমারি থেকে বের করে আয়রন করছে। আয়রনের তার লিখ থাকার কারনে হঠাৎ সুমিকে সখ করে। সুমি ছিটকে পরে অজ্ঞান হয়ে যায়। সে পরে যাওয়ার সময় তার মাথা টেবিলের এক কানি লেগে অনেক রক্ত বের হয়। সে মেঝেতে রক্তাক্ত আবস্থায় অজ্ঞান হয়ে পরে আছে।

এ দিকে সানির মনটা সুমির জন্যে ছট_ফট করেছে। তার কিছুই ভালো লাগছে না। সে সুমি কে কল দে মোবাইলে রিং হয় কিন্তু রিসিভ করে না। এ ভাবে অনেক বার কল দেয়। তার মন কেমন যেনি অস্থির লাগছে। এরকম তো কখনো হয় নি,,অন্য দিন কল দেয়ার সাথে সাথেই রিসিভ করে কিন্তু আজ ও এরকম করছে কেন?

ওর তো আমার কিছু হলো না?? এভাবে নানান চিন্তায় তার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। সে আর এক মুহুর্তের জন্য দেরি না করে আফিসের বসের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে বাসায় চলে যায়। বাসায় গিয়ে কলিং বেল বাজায় কিন্তু দরজা সুমি খুলে দেয় না। সানি কিছু বুঝতে পারছে না কি হইছে?? আর এখন সে কি করবে?? নানা রকম চিন্তায় তার শরির থেকে ঘাম টপ টপ করে পরছে। তার চোখ দিয়ে পানি ঝরছে আর চাপা কান্না সুরে বলছে,,সুমি এই সুমি তুমি দরজা খুলছো না কেন?? দরজাটা খুলো রে জান??

অব শেসে,, কোন উপায় না পেয়ে,, সে দরজাটা ভেংগে ভেতরে ঢুকে দেখে,,সুমি মেঝেতে রক্তাক্ত আবস্থায় অনেক সুন্দর ভাবে টান হয়ে শুয়ে আছে। তার বুঝতে আর বাকি রইলো না।তার মাথায় যেন আকাশ ভেংগে পরে। সে এটা দেখে সে তার বুকে জরিয়ে নিয়ে চিৎকার করে কেঁদে উঠলো। সে কাঁদছে জান আমার এক বার আমার দিকে তাকাউ। এই দেখো তোমার সানি আসছে।

তোমাকে এখন বেরাতে নিয়ে যাবে। তুমি এভাবে শুয়ে আছো কেন,,এই পাগলি কথা বলো,,?? তুমি এভাবে শুয়ে থাকলে হবে বলো?? রেডি হয়ে নাউ যাউ?? আমি আজ তোমাকে অনেক অনেক যায়গা নিয়ে যাবো। তুমি আমাকে ছেরে এভাবে চলে যেতে পারো না। আমি কি তোমাকে কম ভালোবাসতাম যে আমায় ছেরে এ ভাবে চলে যাবে। জান রে,, এখন কে আমাকদ প্রতিদিনের মত ব্লেজার পরিয়ে দিবে?? কে আমাকে বিদয় দিয়ার সময় জরিয়ে ধরে মিষ্টি পাপ্পি দিবে??

এ আল্লাহ আমি তোমার কাছে এমন কি অপরাধ করেছি যে,, তুমি আমাকে এ ভাবে সাস্তি দিবে। আমার সুমিকে তুমি ফিরিয়ে দেউ।
সে যেন একে বারে পাগল হয়ে গেছে। পাগলের মত ভুল বকছে আর তার চোখে মুখে পাপ্পি দিচ্ছে।

এমন সময় সুমির মুখ দিয়ে ""জান"" বলে উঠলো। সানি,,,,,তার শোনা ডাক আর নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছে না।
সুমি কি তাহলে এখনো বেচে আছে??